ইউনিক নম্বর সহ বন্ডের সমস্ত নথি কমিশনে জমা দিল এসবিআই, ছিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

দিল্লি, ২১ মার্চ– অবশেষে কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জমা দিল এসবিআই৷ নির্বাচনী বন্ড নিয়ে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তথ্য আগেও জমা দিয়েছিল শীর্ষ আদালতে৷ কিন্তু তা অসম্পূর্ণ ছিল বলে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বন্ডের ইউনিক নম্বর সহ সমস্ত তথ্য এসবিআই-কে বৃহস্পতিবার জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়৷ সেই তথ্যই এদিন নির্বাচন কমিশনে জমা দিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ৷

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনতে হবে এসবিআইকে৷ এমনকি, সময়ও বেঁধে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত৷ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূডে়র বেঞ্চ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে সব তথ্য জমা করতে হবে৷

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটির ‘দায়সারা মনোভাবের’ সমালোচনা করে প্রধান বিচারপতির সংযোজন, “স্টেট ব্যাঙ্কের ভাবভঙ্গি এমন যে, আপনারা প্রকাশ করতে বলেছেন৷ তাই আমরা করব৷ কিন্ত্ত এটা ঠিক নয়৷ আমরা যখন বলেছি সব তথ্য চাই, তখন সব তথ্যই প্রকাশ করতে হবে৷”


স্টেট ব্যাঙ্ক সর্বপ্রথম নির্বাচনী বন্ড নিয়ে যে যে তথ্য নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছিল তাতে কোন দিন বন্ড দেওয়া হয়েছে, কত টাকার দেওয়া হয়েছে, কতগুলি বন্ড ইসু্য করা হয়েছিল, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কোন ব্রাঞ্চ থেকে বন্ড ইসু্য হয়েছিল, কোন কোন রাজনৈতিক দল সেই সব বন্ড থেকে টাকা তুলেছে, এই সব উল্লেখ ছিল৷ কিন্ত্ত তাতে ইউনিক আলফানিউমেরিক নম্বর ছিল না৷ সেটা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ গত সোমবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে স্পষ্টত জানিয়ে দিয়েছিল, বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব তথ্য জমা দিতে হবে, কোনও তথ্য লুকিয়ে রাখা যাবে না৷ সেই নির্দেশ মেনেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমস্ত তথ্য জমা দিল এসবিআই৷

শীর্ষ আদালত যে ‘ইউনিক নম্বর’-এর কথা বলছে, সেই নম্বর দাতা এবং রাজনৈতিক দলের যোগসূত্র করে দিতে ভূমিকা পালন করতে পারে৷ ফলে সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ এই নম্বর দাতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির সরাসরি লেনদেনের বিষয়টি সামনে আনবে৷ অর্থাৎ কোন দল কার থেকে কত টাকা পেয়েছে, তা জানা যাবে৷ আপাতত যে তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে তাতে দেখা গেছে, নির্বাচনী বন্ড থেকে সবথেকে বেশি লাভবান হয়েছে বিজেপি৷ ৬,৯৮৬.৫ কোটি টাকা পেয়েছে তাঁরা৷

সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ মেনে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য জমা দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলি৷ মুখ বন্ধ খামে সেই তথ্য জমা দেওয়া হয়েছিল৷ গত রবিবার সেই তথ্যও প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন৷ তার আগে অবশ্য স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া সুপ্রিম কোর্টকে এক হলফনামায় জানিয়েছিল, ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ২১৭টি বন্ড ইসু্য করা হয়েছে৷ এর মধ্যে ২২ হাজার ৩০টিই ভাঙিয়ে নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি৷ বাকি ১৮৭টিও ভাঙানো হয়েছে এবং তার অর্থ জমা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিলে৷