• facebook
  • twitter
Saturday, 20 December, 2025

কয়লা পাচার মামলায় ৪৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন, ভার্চুয়ালি হাজিরা বিকাশের

রাজ্যে রেলের বিভিন্ন সাইডিং এলাকা থেকে কয়লা চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ২০২০ সালে সিবিআই কয়লা পাচার মামলার তদন্ত শুরু হয়। প্রথমে এই মামলার তদন্তে নামে আয়কর দপ্তর ও পরে সিবিআই কয়লা পাচার মামলার তদন্তে শুরু করে।

অনুপ মাজি ও বিকাশ মিশ্র। ফাইল চিত্র

অবশেষে কয়লা পাচার মামলায় ৪৯ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করল আদালত। এই মামলার মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা। তাঁর বিরুদ্ধে ইসিএলের লিজ হোল্ড এলাকা থেকে প্রায় ৩১ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা চুরি ও পাচারের অভিযোগ ওঠে। যার জেরে সরকারের প্রায় ১৩৪০ কোটি টাকা ক্ষতি হয় বলে দাবি করা হয়। এই দুর্নীতির জন্য নকল কাগজ তৈরি করে আসল বলে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে অনুপের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ইসিএলের আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি সকলের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে ভার্চুয়ালে হাজিরা দেন মামলার অন্যতম অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্র।

এর আগে একাধিকবার কয়লা পাচার মামলার চার্জ গঠনের দিন ধার্য হয়েও তা পিছিয়ে যায়। প্রথমে গত ৩ জুলাই চার্জ গঠনের দিন ধার্য হয়। কিন্তু সেদিন অভিযুক্ত ও একাধিক সাক্ষী আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। সেজন্য সেদিন চার্জ গঠন করা সম্ভব হয়নি। পরের মাসে অর্থাৎ ৯ আগস্ট আদালতে চার্জ গঠনের দিন দিন ধার্য করেন বিচারক। কিন্তু সেবারও সম্ভব হয়নি। সেই সময় আদালতে কর্মবিরতি থাকায় চার্জ গঠন করা যায়নি। এরপর গত ৭ সেপ্টেম্বর তৃতীয়বার চার্জ গঠনের দিন ধার্য করা হয়। সেই দিন দুটি সংস্থার জটিলতা ছিল। সেজন্য সেদিনও চার্জফ্রেম গঠন করা যায়নি। এরপর সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী ১৪ নভেম্বর চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেন।

Advertisement

ওইদিন চার্জফ্রেম গঠনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারা দেওয়া হয়। ১৮ নভেম্বর অভিযুক্তদের আইনজীবিরা ধারাগুলি নিয়ে বিরোধিতা করেন। বিচারক সব পক্ষের যুক্তি শোনেন। তারপরেই ২৫ নভেম্বর অর্থাৎ সোমবার ফাইনাল চার্জফ্রেম গঠনের দিন ঠিক হয়েছিল। কিন্তু চার্জ গঠনে বাধা পেল বিকাশ মিশ্রর অনুপস্থিতি। সিবিআই-এর এই মামলায় ৩৯৬ জন সাক্ষী রয়েছেন। মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জন। প্রত্যেকের জন্য রয়েছে ২৫ হাজার পাতার নথি। রয়েছে ১১৪৯ পাতার তথ্যপ্রমাণ। এই মামলায় সিবিআই মোট তিনটি চার্জশিট জমা দিয়েছে। এরপর অবশেষে আজ, মঙ্গলবার গঠন হল চার্জফ্রেম।

Advertisement

রাজ্যে রেলের বিভিন্ন সাইডিং এলাকা থেকে কয়লা চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ২০২০ সালে সিবিআই কয়লা পাচার মামলার তদন্ত শুরু হয়। প্রথমে এই মামলার তদন্তে নামে আয়কর দপ্তর ও পরে সিবিআই কয়লা পাচার মামলার তদন্তে শুরু করে। এই মামলায় ১০টি সংস্থার কর্তৃপক্ষ, ১২ জন ইসিএল আধিকারিক, লালার ২০জন ব্যক্তিগত সহযোগী এবং ৪জন কয়লা মাফিয়া যুক্ত রয়েছেন। বাকি তিনজন অনুপ মাজি, বিকাশ মিশ্র ও রত্নেশ ভর্মা। যাঁরা বিশেষভাবে অভিযুক্ত। সেজন্য মামলাটি চারটি পর্যায়ে ভিন্ন ফ্রেমে চার্জ গঠন করা হয়েছে।

এদিন সওয়াল জবাবের সময় অনুপ মাজি নির্দোষ বলে দাবি করেন। এদিন বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, আপনি দোষী না নির্দোষ? বিচারকের প্রশ্নের জবাবে লালা এই উত্তর দেন। গত শুনানিতে মামলাটি দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি মামলায় ২৩ জনের এবং ওপর মামলায় ২৭ জনের নাম ছিল। এই ২৩ জনের মধ্যে রয়েছেন অনুপ মাজি ওরফে লালা, রতনেশ বর্মা এবং বিকাশ মিশ্র। কয়লা পাচার মামলায় যত অভিযোগ রয়েছে, এই তিন পাণ্ডার নাম রয়েছে। সেজন্য এই তিনজনের বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ আলাদাভাবে হবে। আর বাকি একটি মামলায় ২৭ জনের মধ্যে রয়েছে। এই ২৭ জনের মধ্যে কেউ কোলিয়ারি ম্যানেজার, নিরাপত্তারক্ষী অথবা স্থানীয় দোকানদার।

Advertisement