মানিক ভট্টাচার্য, কুন্তল ঘোষ, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার একের অভিযুক্ত জামিন পেয়েছেন। তবে এখনও এই মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত তথা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার এই মামলাটি শোনার কথা ছিল শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার ডিভিশন বেঞ্চের। এই বেঞ্চই কয়েক দিন আগে কুন্তল ঘোষের জামিন দেয়। অনেকেই মনে করেছিলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও সোমবার জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু তা হল না।
বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার ডিভিশন বেঞ্চে সোমবার পার্থের মামলার রিপোর্ট জমা পড়েছে। বিচারপতিরা জানান, রিপোর্ট পড়ার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। তাই সোমবার মামলাটির শুনানি সম্ভব নয়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ইডি, সিবিআই এবং জেল হেফাজতে কতদিন ছিলেন, জানতে চায় বেঞ্চ। সেই তথ্য দিতে দেরি করেন আইনজীবীরা। এতে যথেষ্ঠ ক্ষোভ প্রকাশ করেন দুই বিচারপতি।
প্রাক্তন মন্ত্রীর আইনজীবী মুকুল রোহতগি তাঁর মক্কেলের জামিনের সপক্ষে বেশ কিছু যুক্তি দেখিয়েছেন। তাঁর দাবি, পার্থর বাড়ি থেকে কোনও টাকা উদ্ধার। তাঁর পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধার হয়। অর্পিতাও সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন। পিএমএলএ মামলায় জেলবন্দি হিসাবে সর্বোচ্চ যে সাজা হয়, তার এক-তৃতীয়াংশ মেয়াদ ইতিমধ্যেই কাটিয়ে ফেলেছেন পার্থ, এমনটাই জানিয়েছেন মুকুল রোহতগি।
জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী আদালতে বলেন, পার্থের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে নিয়োগ দুর্নীতির নগদ অর্থ উদ্ধার হয়। পার্থ শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে দাবি করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। গত শনিবার আদালতে ইডির আইনজীবী এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। ইডির দাবিগুলির বিরোধিতা করে পার্থের আইনজীবীও রিপোর্ট জমা করেছেন।
এরপরই দু’পক্ষের রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চায় শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার ডিভিশন বেঞ্চ। সূত্রের খবর, আগামী বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে জুলাই মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর পাশাপাশি দলের মহাসচিব পদ থেকেও তাঁকে অপসারিত করে তৃণমূল। সেই সময় পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে নগদ পঞ্চাশ কোটির বেশি টাকা উদ্ধার হয়। কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির দাবি, এই টাকা নিয়োগ দুর্নীতির টাকা।