দ্রুত পাল্টাচ্ছে সময়, তার সঙ্গেই তাল মিলিয়ে পাল্টাচ্ছে মানুষের অভ্যেসও৷ সেই অভ্যেসে শিকেয় স্বাস্থ্যবিধি৷ ছুটন্ত মানুষের না আছে খাবার ঠিক, না ঘুমের৷ তাতেই ঘনাচ্ছে যত বিপদ৷ আর সেই বিপদের হদিস নিয়ে সমাধান দিতে আমরা হাজির স্বাস্থ্যের হাল-হকিকৎ নিয়ে, সঙ্গে সুস্থ থাকার পরামর্শও৷
যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাদের লাল লঙ্কা বা গরম মশলা কম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়৷ বলা হয়, বেশি গরম মশলা এবং শুকনো লাল লঙ্কা দেওয়া রান্না খেলে পেটে আলসার বা ঘা হয়৷ এই ধারণা কি আসলেই ঠিক? চিকিৎসকরা এ বিষয়ে কী বলেন? পেটের আলসারের আসল কারণ কী? চিকিৎসকদের মতে, মশলাযুক্ত খাবারে থাকা একাধিক যৌগ পেটের জন্য অত্যন্ত উপকারী৷ অনেকের ধারণা লাল লঙ্কা বা মশলাযুক্ত খাবার খেলে পেটে আলসার হয়৷ এই ধারণা ঠিক নয়৷ এসব খাবারের কারণে কারো আলসার হয় না৷ তবে এসব খাবার আগে থেকে হওয়া পেটের আলসারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে৷ পেটের আলসারের মূল কারণ কী?
একটি গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে যে মশলাযুক্ত খাবার বা শুকনো লঙ্কায় ক্যাপসাইসিন নামক একটি যৌগ থাকে৷ এটি পাকস্থলীর ভিতরের আস্তরণের জন্য খুবই উপকারী৷ গবেষণা অনুযায়ী, ক্যাপসাইসিন হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করে৷ ফলে পেট সুস্থ থাকে এবং পেটের আলসারের ঝুঁকি আরও কমে৷
অন্ত্রের প্রাচীরে শ্লেষ্মা উৎপাদন ক্ষমতাও বাড়ায় ক্যাপসাইসিন৷ এতে আলসারের ঝুঁকি কমে৷ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন লাল লঙ্কা বা মশলাদার খাবার নয়, পাকস্থলীর আলসারের কারণ হতে পারে পুষ্টিকর একটি খাবার বা পানীয়৷ এটি হলো দুধ৷ অনেকেই, ল্যাকটোজ টলারেন্ট হয়৷ যাদের দেহে ল্যাকটোজ হজমকারী উৎসেচক তৈরি হয় না, তাদের পেটে দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্য পাকস্থলীর আলসারের কারণ হতে পারে৷
এছাড়াও হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া প্রধানত পাকস্থলীর আলসারের জন্য দায়ী৷ এটি অন্ত্রের আস্তরণে ক্ষত সৃষ্টি করতে শুরু করে৷ এছাড়া, যারা দীর্ঘ সময় ধরে আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসপিরিনের মতো নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন, তারাও আলসারের সমস্যায় ভুগতে পারেন৷ অনেকসময় ওষুধের কারণেই আলসারের সমস্যা হয়৷ আবার কিছু সংক্রমণ, কেমোথেরাপি এবং দুর্ঘটনার কারণেও পেটে আলসার হতে পারে৷