কানে ব্যথার উপশমে

রাতে ঘুম ভেঙে গেল আচমকা কানের ব্যথায়! এমনই অসহ্য সে ব্যথা যে, শুয়ে বসে শান্তি নেই। ওষুধ, ডাক্তার, কিছুই হাতের কাছে নেই। এই পরিস্থিতিতে হয়তো সকলকেই কোনও না কোনও সময়ে পড়তে হয়েছে। কী করবেন?

বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাধারণত কানে ব্যথা হয় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে। পুরোনো সর্দিকাশি থেকেও কানে ব্যথা হতে পারে। আবার স্নান করতে গিয়ে কানে জল ঢুকে গিয়েও টনটন করতে পারে কান। এই ব্যথা কমাতে হলে আগে সংক্রমণ কমাতে হবে। কিছুক্ষেত্রে উপশম মেলে একমাত্র অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধে। বাড়াবাড়ি হলে, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই হবে। তার আগে প্রচণ্ড যন্ত্রণা কমিয়ে একটু স্বস্তি পেতে হলে, মেনে দেখতে পারেন কিছু ঘরোয়া টোটকা।

কানে গরম সেঁক দিন
কানে গরম সেঁক দিলে প্রবল ব্যথাতে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। অনেক সময় কানে পুঁজ জমলে যন্ত্রণা হতে পারে। গরম সেঁক নিলে কানের ভিতরে জমে থাকা পুঁজ বেরিয়ে যাবে, ব্যথার উপশম হবে।
গরম জলে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে নিংড়ে নিন। যে-কানে ব্যথা, তার উপরে ভেজা কাপড়টা দিয়ে মিনিট দুই রাখুন। তারপর মাথা কাত করে পুঁজটা বেরিয়ে যেতে দিন।


ভিনিগারে সুরাহা
ভিনিগারের অ্যাসেটিক অ্যাসিড কানের সংক্রমণ কমাতে পারে। সমপরিমাণে সাদা ভিনিগার আর রাবিং অ্যালকোহল নিন একটা পাত্রে। ড্রপার দিয়ে সংক্রমিত কানে দু’ তিন ফোঁটা দিন। পাঁচ মিনিট ওভাবেই শুয়ে থাকুন তারপর আগের মতোই মাথা অন্যদিকে কাত করে তরলটা কান থেকে বের করে দিন।

হাইড্রোজেন পারক্সাইড ড্রপ
কানের ইনফেকশন কমিয়ে পুঁজ শুকোতে দারুণ ভালো কাজ দেয় হাইড্রোজেন পারক্সাইড। এটি যে-কোনও ওষুধের দোকানেই পাবেন। ড্রপারে করে তিন-চার ফোঁটা দ্রবণ কানে দিয়ে ওভাবেই শুয়ে থাকুন কিছুক্ষণ। তারপর মাথা কাত করে কানের ভিতরের তরলটা বের করে দিন। দিনে বেশ কয়েকবার করতে পারেন। ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমে ব্যথা উধাও হবে।

রসুনের তেল
অল্প অলিভ অয়েলে এক কোয়া রসুন অল্প থেঁতো করে গরম করুন। তেল গরম হলে ছেঁকে নিয়ে তা সংক্রমিত কানে দু’তিন ফোঁটা দিন। বারকয়েক এমন করলে একটু আরাম পাবেন।

নিমের রস
নিমপাতা ভালো করে ধুয়ে থেঁতো করে নিন। নিমপাতার এই রসটা কানে দিতে পারেন। অথবা নিমের তেলে তুলো ভিজিয়ে নিংড়ে কানে কয়েক মিনিট দিয়ে রাখুন। নিমে ব্যথা কমানোর গুণ রয়েছে, যা কান ব্যথাতে খুবই সুফল দেয়।

কানে ব্যথা হলে আমরা প্রথমেই খোঁচাখুঁচি করি। তাতে সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কানে ইয়ারবাড, দেশলাই কাঠি, সেফটিপিন জাতীয় জিনিস ঢোকানো বিপজ্জনক হতে পারে, তাতে সমস্যা আরও জটিল হবে।

স্নানের সময় কানে যেন জল ঢুকতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতেই হবে। স্নান করতে যাওয়ার আগে, কানে পেট্রোলিয়াম জেলি মাখানো তুলো গুঁজে নিন। মনে রাখবেন, কানে যদি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে থাকে, তা হলে এই টোটকাগুলো আপনাকে সাময়িক আরাম দেবে। কিন্তু তা পুরোদস্তুর চিকিৎসার বিকল্প হতে পারে না। তাই ব্যথা সাময়িক কমে গেলেও অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে নিতে ভুলবেন না।