পাঁচ পড়ুয়ার শাস্তি প্রত্যাহার করার প্রতিবাদে বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কলেজ কাউন্সিলের সভা উত্তপ্ত হয়ে উঠল। দুপুর ১ টা নাগাদ অধ্যক্ষের কনফারেন্স রুমে এই সভা শুরু হয়েছিল। একদল অধ্যাপক তথা চিকিৎসকের দাবি, মঙ্গলবার রাতে আচমকা কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই ওই পাঁচ পড়ুয়ার শাস্তি প্রত্যাহার করা হয়। এই বৈঠকই বাতিল করার দাবি তুলে বুধবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কলেজ কাউন্সিলের সভা।
আন্দোলনের চাপে মঙ্গলবার গভীর রাতে বৈঠক ডেকে পাঁচ ছাত্রের বহিষ্কার তখনকার মতো স্থগিত করার সিদ্ধান্ত করেছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। বুধবার দুপুর ১টায় কলেজ কাউন্সিলের ডাকা বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বুধবার বৈঠক শুরু হতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে উত্তেজনার আবহেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়। টিএমসিপি ইউনিটের নামে হুমকি ও তোলাবাজির অভিযোগ তুলে সরব হন চিকিৎসক–পড়ুয়ারা। পাশাপাশি উঠে আসে অমানবিক অত্যাচারের অভিযোগও। টিমসিপির ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত বলে দাবি করা হয়। ভালো পরীক্ষা দিলেও নম্বর কেটে নেওয়া হত। আরজি কর কাণ্ডের পর বহিষ্কৃত চিকিৎসক অভীক দে ও তাঁর দলবল এইসব ঘটনার পিছনে ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পড়ুয়াদের এ সব অভিযোগের তদন্ত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ১২ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। এই ১২ জনের মধ্যে ৩ জন গ্রুপ অফিসার, ৩ জন হাউস স্টাফ, একজন ইন্টার্ন ও পাঁচজন ছাত্র। এই পাঁচ ছাত্রকেই ‘ডিস কলেজিয়েট’ করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করেন ওই পাঁচ পড়ুয়া সহ অন্যরা। চাপের মুখে মাঝরাতেই বৈঠকে বসে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই বৈঠকেই ছাত্রদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত তখনকার মতো প্রত্যাহার করা হয়েছিল। জানানো হয়েছিল, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বুধবার নেওয়া হবে। বুধবারের সেই বৈঠকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল হাসপাতালের অধ্যক্ষের কনফারেন্স রুম।