সামনেই কালীপুজো ও দীপাবলি। এটি আলোর উৎসবই শুধু নয়, বাজির উৎসবও বটে। অথচ এই সব বাজি থেকেই শরীরে নানা সমস্যা হতে পারে। আগুন লেগে গিয়ে বড়রকমের বিপদই শুধু নয়, দীপাবলিতে পোড়ানো বাজি থেকে ফুসফুসেরও জটিল সমস্যা হতে পারে। যাদের ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে, বাজির বিষাক্ত ধোঁয়া তাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যাকে কয়েকগুন বাড়িয়ে দিতে পারে।
বাজি থেকে চোখেরও ক্ষতি হয়। মুখের বা শরীরের খুব কাছে যদি বাজি পোড়ানো হয়, বারুদের ফুলকি সরাসরি চোখে ঢুকে যেতে পারে। আগুন ধরানোর সময় বাজি চোখের কাছেই ফেটে যেতে পারে। এর ফল ভয়ংকর। সারা জীবনের মতো নষ্ট হয়ে যেতে পারে আপনার চোখদুটি।
তাছাড়া বারুদের মধ্যে থাকে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড, ওজোন গ্যাস ও সোডিয়াম, পটাশিয়াম এবং সালফার-এর মতো বেশ কিছু ক্ষতিকর যৌগ। এগুলি চোখে ঢুকলে কর্নিয়ার যেমন ক্ষতি হতে পারে, অন্ধত্বও আসতে পারে। রেটিনা ফুটো করে দিতে পারে আগুনের ফুলকি। বাজির আলো ও আগুনে চোখের লেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হলে, অকালে ক্যাটারাক্ট বা ছানি এসে যেতে পারে।
লাল, নীল, হলুদ, সবুজ- নানা বর্ণের চোখধাঁধানো আলোর বাজিও কিন্তু খুবই ক্ষতিকর। অধিকাংশ বাজিতেই কমবেশি সীসা থাকেই। এছাড়া বাজিতে থাকে চারকোল, পটাশিয়াম নাইট্রেট এবং সালফারের গুঁড়ো বা গন্ধকের মিশেল। নিঃশ্বাসের সঙ্গে এই বিষ দেহে প্রবেশ করলে, শ্বাসনালির নানা সমস্যা তৈরি করতে পারে। এর উপরে বাজি থেকে নির্গত বালি, ধুলো, সিলিকন- হাঁপানির (সিওপিডি) রোগীদের সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে।
বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকলে অনেক সময় রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে, সালফিউরিক অ্যাসিডের মতো রায়ায়নিক পদার্থ তৈরি হয়। এই দূষিত বাতাস শরীরে বেশি মাত্রায় প্রবেশের ফলে মাথাধরা, গা বমি, শ্বাসকষ্ট, মাথার যন্ত্রণার মতো সমস্যা তৈরি করে।
শব্দদূষণও কালীপুজোর একটা বড়ো সমস্যা। সরকারি সতর্কীকরণ এবং নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, রাত বাড়লেই শুরু হয় শব্দবাজির দাপট। ৮৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ সহ্য করতে পারে আমাদের শ্রবণেন্দ্রীয়। শব্দের মাত্রা এর বেশি হলে কানের নানা ক্ষতি হয়। শ্রবণ ক্ষমতা কমে যাওয়া, হার্টের গতি ও রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়া, নানা মানসিক বৈকল্য, স্নায়ু রোগ ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে। মনে রাখবেন ১৫০ ডেসিবেল-এর বেশি শব্দ, কানের পর্দা ফাটিয়ে দিতে পারে।