বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, সে তো আমরা জানিই। কিন্তু নতুন গবেষণা বলছে এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মতো রোগ থেকেও রক্ষা করতে পারে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং চিনের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৪২,০০০-এরও বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করেছেন। দেখা গেছে যে, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং নিঃসঙ্গতা রক্তের নির্দিষ্ট প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত যা প্রদাহ, ইমিউন সিস্টেম এবং স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করে। সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং একাকীত্ব হল একটি ব্যক্তিগত অনুভূতি। নেচার অফ হিউম্যান বিহেভিয়ার-এ প্রকাশিত গবেষণায় জানা গেছে যে, সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মনোভাবের সঙ্গে যুক্ত ১৭৫টি প্রোটিন এবং একাকীত্বের সঙ্গে যুক্ত ২৬টি প্রোটিন ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। এই প্রোটিনগুলি প্রদাহ, ভাইরাল সংক্রমণ, ডায়াবেটিস এবং কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার মতো রোগের সঙ্গে জড়িত।
একটি মূল প্রোটিন এডিএম, যা স্ট্রেস এবং অক্সিটোসিনের মতো হরমোনগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি ‘লভ হরমোন’ নামে পরিচিত। এডিএম-এর উচ্চমাত্রা, মস্তিষ্কের সেই অংশগুলির সঙ্গে যুক্ত, যা মানসিক এবং সামাজিক প্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী এবং তা মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। আরেকটি প্রোটিন, এএসজিআর ১, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং হৃদরোগের ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত।
সনাক্ত করা অন্যান্য প্রোটিনগুলি ইনসুলিন প্রতিরোধ, ধমনীর ক্ষতি এবং ক্যান্সারের অগ্রগতির সঙ্গে যুক্ত। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. চুন শেন বলেন, ‘এই প্রোটিনগুলি সামাজিক সংযোগকে কীভাবে প্রভাবিত করে, সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি দেয়। গবেষণাটি এও তুলে ধরেছে যে, নিঃসঙ্গতা মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে। এই সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং নিঃসঙ্গতা বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের উদ্বেগের কারণ। মানসিক সুস্থতার জন্যই নয়, সামাজিকভাবে সংযুক্ত থাকার গুরুত্ব অপরিসীম। গবেষকরা কমিউনিটি প্রোগ্রাম, সামাজিক ক্রিয়াকলাপ ও গঠনমূলক কাজে যুক্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন, কারণ এগুলি একাকীত্ব হ্রাস করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।’