নিখুঁত হতে নাক ‘গড়ার’ দৌড়ে

করোনা যেমন মানুষের অনেক ক্ষতি করে দিয়েছে আবার কিছু মানুষের লাভও করিয়েছে৷ লাভবানদের তালিকায় অবশ্য বেশিরভাগই রয়েছেন চিকিৎসক, মাস্ক, ওষুধ, ভ্যাকসিন নির্মাতা কোম্পানীগুলি৷ তবে এক শ্রেণীর সাধারণ মানুষও কিন্তু এই বিদায় নেওয়া করোনা থেকে কিছু লাভ নিতে শিখে গেছে৷ এই যেমন ধরুন দক্ষিণ কোরিয়ার নারীরা৷ বিশ্বের বেশ কিছু দেশ আছে যার করোনোর পরও মাস্ক ব্যবহার করেন৷ সে দূষণ থেকে বাঁচতেই হোক বা অন্য কোন ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বা অনেকের কাছে এখন এটি একটি অভ্যেসে পরিণত৷ মাস্ক তাদের কাছে আজও হয়ে উঠছে নিত্যদিনের পরিধান উপকরণ৷

তবে আস্তে-আস্তে এই অভ্যেসও পাল্টে যাবে৷ অচিরেই হয়তো আর মাস্ক পরতে হবে না৷ তবে তার আগে মাস্ককে তাদের সুন্দরতা গড়ণে ব্যবহার করে নিতে চান কোরিয় সুন্দরীরা৷ তাদের শ্রী হারানো নাক সুন্দর করতে কসমেটিক সার্জারি শুরু করে দিয়েছেন সে দেশের অনেকে৷

২০ বছর বয়সি রিউ হান-না একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী৷ তিনি গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি নাকে কসমেটিক সার্জারি করিয়েছেন৷ তার মনে হচ্ছিল, যদি তখনই না করেন, তা হলে হয়তো আর সুযোগ পাবেন না৷ কারণ, এখনও মাস্ক পরা যাচ্ছে এরপর খুলে ফেলতে হবে৷


বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে রিউ জানান, নাকের কাজটা আমি সব সময়ই করিয়ে ফেলতে চাইছিলাম৷ মাস্ক খুলে ফেলবেন, তাই তার আগেই করালাম৷ এজন্য তার প্রায় চার হাজার মার্কিন ডলার বা সোয়া তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘সার্জারির পর নাকে কিছুটা ক্ষত ও ফোলা থাকবে৷ কিন্ত্ত মাস্ক পরে থাকব তো, কেউ বুঝবে না৷’ রিউর মতো করে ভাবেন দক্ষিণ কোরিয়ার অনেকেই৷ তাই ২০২০ সাল থেকেই কসমেটিক সার্জারি সংখ্যাও বেড়েছে৷ এ বছর আরও বাড়তে পারে৷ বিশ্বের কসমেটিক সার্জারির রাজধানী হিসাবে পরিচিত দেশটি ২০২০ সালে ১০.৭ বিলিয়ন ডলার (প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা) আয় করেছে এ খাত থেকে, যা আগের বছরের তুলনায় ৯.২ ভাগ বেশি৷ ২০২৩ সালে তা ২১.৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে কসমেটিক সার্জারি প্ল্যাটফর্ম গ্যাংনাম উননি৷

পার্ক চিওল-উ বলেন, শরীরের বাইরের অঙ্গ সম্পর্কে, বিশেষ করে চোখ, ভ্রু, নাক ও কপালে সার্জারি বা সাধারণ চিকিৎসা-সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে৷

তিনি উআহইন নামের একটি প্লাস্টিক সার্জারি ক্লিনিকের সার্জন৷ রিউর-র নাকের প্লাস্টিক সার্জারি তিনিই করেছেন৷ শিন শ্যাং-হো নামের আরেক সার্জন বলেন, অনেকে করোনার সময় যে প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন তা এসব সার্জারিতে ব্যয় করছেন৷ ‘মনে হচ্ছে যেন সবাই বদলা নিচ্ছেন৷ খদ্দেররা কসমেটিক সার্জারি করে যেন মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন,’ বলেন তিনি৷ গ্যাংনাম উনি বলছে, গত বছর তাদের সেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ৬৩% বেড়েছে৷ প্রায় ১০ লাখ লোক শুধু কাউন্সেলিং সেবাই নিয়েছেন, যা আগের বছরের দ্বিগুণ৷