• facebook
  • twitter
Wednesday, 8 January, 2025

নীল আলোর ক্ষতিকারক দিক

বর্তমান সময়ে মোট জনসংখ্যার প্রায় ষাট শতাংশ মানুষ, দিনরাত মিলে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা কাটান ডিজিটাল স্ক্রিনের সামনে।

প্রতীকী চিত্র

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে এখন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে অতিরিক্ত গাজেটের ব্যবহার। কিন্তু এইসব ডিজিটাল গাজেটস থেকে নির্গত নীল আলোর ক্ষতিকারক দিকগুলি নিয়ে ভেবেছেন কখনও? এই আলো আসলে আমাদের ত্বক, চোখ এবং মস্তিষ্কে কুপ্রভাব ফেলে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এই যে, সূর্যের ইউভি রশ্মি থেকে আমরা নিজেদের যতটা বাঁচিয়ে রাখি, এই নীল আলোর কুপ্রভাব সম্পর্কে কিন্তু আমরা ততটা সচেতন নই।

সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা গেছে যে, এই নীল আলো আমাদের ত্বককে শুধু রুক্ষ্ম, শুষ্ক, শিথিল করে তোলে না, সেই সঙ্গে হাইপারপিগমেনটেশন-এর মতো সমস্যা এবং অকাল বার্ধক্য ডেকে আনে।

বর্তমান সময়ে মোট জনসংখ্যার প্রায় ষাট শতাংশ মানুষ, দিনরাত মিলে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা কাটান ডিজিটাল স্ক্রিনের সামনে। তাই দেখা যাচ্ছে, সূর্যের অতি বেগুনি ফোন অফ অন করার বিষয়টিও অত্যন্ত ক্ষতিকারক। বলা যায়, অনেকটা সময় সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ত্বকে পড়লেও এতটা ক্ষতি হয় না। কম্পিউটার-এ যদি ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করা হয়, তাহলে যে-পরিমাণ নীল আলো আমাদের চোখ এবং ত্বকের উপর পড়ে, তা দুপুরে ২০ মিনিট সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি গায়ে মাখার থেকেও ক্ষতিকারক।

রশ্মির থেকে বেশি ক্ষতি হচ্ছে এই নীল আলো থেকে। হাই এনার্জি ভিজিবল লাইটও বলা হয় এই নীল আলোকে। ব্লু লাইট রেডিয়েশনের কারণে পিগমেন্টেশন, ত্বক পাতলা ও লালচে হয়ে যাওয়া প্রভৃতি সমস্যা দেখা যায়। এর ফলে ত্বক দুর্বল হয়ে গিয়ে নানারকম রোগের কবলে পড়ে।

বস্তুত ইউভি লাইট-এর থেকেও এই নীলরশ্মি ত্বকের গভীরে ঢুকে বেশি ক্ষতি করে। তাই, ত্বকের সুরক্ষার জন্য ঘরে এবং বাইরে সর্বত্র সতর্কতা জরুরি। সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে যে, নীল আলো পড়ার কারণে, রক্তকোষে ফ্রি র‍্যাডিকেন্স দ্রুত বেড়ে গিয়ে ত্বকের প্রচুর ক্ষতি করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হল, ত্বকের প্রোটিন কমে যাওয়া। সময়ের আগে বার্ধক্য রোধ করতে হলে শুধু সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচানোর জন্য সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহারের পাশাপাশি, এমন লোশন ব্যবহার করতে হবে, যা নীলরশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব থেকেও আপনাকে বাঁচাবে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বেশিরভাগ নারী-পুরুষ দিনরাতের মধ্যে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা সরাসরি টিভি, ট্যাব, কম্পিউটার অথবা মোবাইল ফোনের নীলরশ্মিতে এক্সপোজড হন। ওই সময়ের মধ্যে বারবার মোবাইল

সুরক্ষার উপায়

* কম্পিউটার, টিভি এবং মোবাইল ফোন-এর স্ক্রিন থেকে যতটা সম্ভব চোখকে দূরে রাখুন

* মোবাইল-এ ব্লু লাইট গার্ড লাগান

* কিছু স্মার্টফোন-এর সেটিংস-এ গিয়ে হলুদ আলো সিলেক্ট করলেই, ওই আলো নীল আলোকে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় করে দেবে। এতে ত্বক ও চোখের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবেন

* কেমিক্যাল যুক্ত স্কিন-লোশন ব্যবহার না করে, অ্যালোভেরা-যুক্ত স্কিন লোশন ব্যবহার করুন

* শুধু বাইরে বেরনোর সময়ই নয়, কম্পিউটার, মোবাইল প্রভৃতি ব্যবহার করার আগেও স্কিন প্রোটেকশন লোশন ব্যবহার করুন

* বেদানা, আঙুর, তরমুজ প্রভৃতি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-যুক্ত ফল খান বেশি পরিমাণে। এইসব ফল খেলে নীল আলোর ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যাবে।