কঠিন চ্যালেঞ্জেই ফিরবে সব হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি

পরিস্থিতি-পরিবেশ মানুষকে শুধু এগিয়ে নিয়ে যেতেই সাহায্য করে না৷ তাকে অনেকটা পেছনে ঠেলে ফেলে দিতেও পারে৷ এই যেমন ধরুন হঠাৎ করে আপনি দেখছেন কারণে-অকারণে সব ভুলে যাচ্ছেন৷ অবস্থা এমন যে কর্মব্যস্তময় জীবনের চাপে মানুষের মস্তিষ্ক এখন যেন বাচ্চাদের হাতের লেখা খাতা৷ যাতে কেউ বুঝি অনেককিছু রাবার দিয়ে ঘষে মুছে ফেলছে অনেককিছু৷
বয়েসকালে নয় কমবয়েসেই সব ভুলে যেতে বসেছেন৷ ভাবা যায়! এতে অতীতের তুলনায় সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো বেশি ভুলতে বসেছে মানুষ৷ সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা কিন্ত্ত দাবি করছে যে নিয়মিত যদি মাথা খাটানো যায়, তা হলে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব আলঝেইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো কিছু রোগ৷
সাম্প্রতিককালে সব থেকে বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্মৃতিভ্রষ্ট বা ভুলে যাওয়ার রোগটি৷ যাকে বিজ্ঞানীদের ভাষায় ডিমেনশিয়া বলে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ এই ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত৷ মূলত এর কারণ ধরা হচ্ছে সাম্প্রতিক জীবনের স্ট্রেস, সেটা এমন পর্যায়ে বেড়েছে যে মানুষ কখন কী খেয়েছে বা কী করছে সেটাই হঠাৎ মনে করে উঠতে পারে না৷ যদি আপনার বা আপনার বয়স্ক অভিভাবকদের কারো ভুলে যাওয়ার সমস্যা থাকে, তা হলে প্রতিদিন নিজেদের মধ্যেই একটা খেলা খেলতে পারেন৷ প্রিয় গান বা সুরের একটা তালিকা তৈরি করুন, তার পর সেটা বাজিয়ে মনে করার চেষ্টা করুন সেই গান বা সুরের সঙ্গে আপনার কোন স্মৃতি জডি়য়ে রয়েছে৷ কারণ গান আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দারুণ কার্যকর৷ আপনি অফিস যাওয়ার সময় যানবাহনে যতটা সময় কাটান, তার মধ্যেই বেশ কয়েকটি ক্রসওয়ার্ড বা সুডোকু পাজল সলভ হয়ে যাওয়ার কথা৷ যেকোনো ধাঁধা সমাধানের জন্য মস্তিষ্ককে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়, নার্ভগুলিও সচল ও সতর্ক হয়ে ওঠে৷ শব্দ-ছকের আর একটা সুবিধে হচ্ছে, প্রচুর নতুন শব্দ শেখা যায় এবং সেগুলিকে মনে রাখার জন্যও মস্তিষ্ক সচেষ্ট হয়ে ওঠে৷ তাই চেষ্টা করুন পাজল মেলানোর৷
শিশুদের সঙ্গে যদি খানিকটা সময় নির্মল আনন্দে কাটানো সম্ভব হয়, তা হলে মন বেশ ঝরঝরে থাকে৷ শিশুদের সঙ্গে তাদের মতো করে খেলুন, লুকিয়ে আইসক্রিম খেতে যান, তাদের কল্পনার দুনিয়ার শরিক হয়ে উঠুন৷ স্ট্রেস কমাতে তা ম্যাজিকের মতো কাজে দেয়৷ যারা দিনের অনেকটা সময় গৃহবন্দি হয়ে কাটান নানা শারীরিক সমস্যার কারণে, তারা এই কাজগুলো করতে পারেন-যে হাতটি কম শক্তিশালী (ডানহাতিদের ক্ষেত্রে বাম হাত), সেই হাতে নাম সই করুন দশবার৷ দাঁত মাজতে, চুল আঁচড়াতে পারলেও খুব ভালো হয়৷ দুটো হাত কাজে লাগান সমান তালে৷ ডান হাত দিয়ে টেবিলের উপর টোকা মারুন, বাম হাত দিয়ে ওই সময়েই টেবিলে একটি কাল্পনিক বৃত্ত আঁকার চেষ্টা করুন৷ দুটো দিক একসঙ্গে কাজ করলে মস্তিষ্ক ঝরঝরে হয়ে উঠবে৷ যদি কাজগুলো স্বচ্ছন্দে করতে পারেন, তাহলে পরের বার আরও একধাপ কঠিন চ্যালেঞ্জ দিন নিজেকে৷