বাসি রুটির গুণাগুণ

সকালের জলখাবারে কারও পছন্দ ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত, কারও পছন্দ গরম রুটি। আবার কেউ পছন্দ করেন ওটস কিংবা সিরিয়াল। হাজার হলেও দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার বলে কথা। কিন্তু সময়ের অভাবে অনেক সময় দেখা যায়, সকাল সকাল জলখাবারের জন্য রুটি তৈরি করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এ জন্য ফ্রিজে রাখা রুটি দিয়েই সারতে হয় ব্রেকফাস্ট। জানেন কি, অন্যান্য বাসি খাবার স্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণ হলেও, বাসি রুটি স্বাস্থ্যকর তো বটেই বরং পুষ্টির দিক দিয়েও বাকি খাবারের থেকে এগিয়ে।

শুনতে অবাক লাগছে? এটা কিন্তু সত্যি। গরম-গরম রুটির তুলনায় বাসি রুটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে কম। বাসি রুটি সাধারণত আগের দিন সেঁকা হয়। যা সারা রাতে ঠান্ডা হয়ে যায়। খাওয়ার আগে ফের তা গরম করা হয়। সব মিলিয়ে ঠান্ডা গরমের মিশ্রণে রুটির কার্বোহাইড্রেটের গঠন বদলে যায়- যা সরল গ্লুকোজে পরিণত হতে বেশি সময় লাগে। ফলে সকালবেলা হুট করে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় না। এ জন্য সকাল সকাল কাজে গিয়ে দ্রুত মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয়।

সারা রাত ঠান্ডা হওয়ার পর আবার গরম করা রুটিতে কার্বোহাইড্রেট ভেঙে যায়। ফলে সহজে হজম করা সম্ভব হয়। এছাড়া বাসি রুটি পাকস্থলীর ওপরও চাপ কম ফেলে। সারা রাত ধরে বাসি রুটিতে জন্ম নেয় ব্যাক্টেরিয়া। তবে রুটিতে জন্ম নেওয়া এই ব্যাক্টেরিয়া কিন্তু বাস্তবে বেশ উপকারী। গাঁজন (ফার্মেন্টেশন) প্রক্রিয়ায় জন্ম নেওয়া এই ব্যাক্টেরিয়া, পাকস্থলীতে গিয়ে হজমে সাহায্য করে।


ভাবতে পারেন, বাসি রুটি যখন এত কিছু করছে, তখন নিশ্চয়ই পুষ্টিগুণে কোনও হেরফের আছে? মজার ব্যাপার হল ধোঁয়া ওঠা গরম রুটিতে যে-পুষ্টি রয়েছে, বাসি রুটিতেও প্রায় একই পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে। সামান্য দু’ একটি ভিটামিনের পুষ্টিগুণ এদিক সেদিক হলেও, বাকি সব প্রয়োজনীয় বি ভিটামিন, আয়রন, ফাইবারের পরিমাণ একই থাকে।

সকালে উঠেই খাবার তৈরি করার মতো বিরক্তিকর কাজ আর কী-ই বা হতে পারে। সেখানে বাসি রুটিই হতে পারে সুন্দর একটি সমাধান।। তার মানে এই নয়, নিজের সময় ও পকেট বাঁচাতে দুই তিন দিন আগের রুটি খেয়ে সকালের খাবার শেষ করবেন। রুটি হতে পারে সর্বোচ্চ এক দিনের বাসি। হয় আগের দিন সকালে বানানো অথবা আগের রাতে বানানো। এক দিনের বেশি পুরোনো রুটি আপনার শরীরে উপকারের বদলে ক্ষতিই করবে।