পুজোর ক’টা দিন বাঙালির খাবারের তালিকায় একটা বড়ো রকমের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। প্যান্ডেল হপিংয়ে বেরিয়ে চপ, কাটলেট, চাউমিন ইত্যাদি খেয়ে ফেলেন, এরকম মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। আর তার জেরেই শরীরে দেখা দেয় অ্যাসিডিটির সমস্যা। যারা গ্যাস অম্বলের সমস্যায় ভোগেন তাঁদের এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
চিকিৎসকের মতে, ‘অ্যাসিডিটি হলে বমি বমি ভাব থাকাটা স্বাভাবিক।
এছাড়াও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ, বদহজম, শরীরে অস্থিরতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অম্বল, পেটে জ্বালা, বমি, পেটে ও বুকে ব্যথা, চোঁয়া ঢেকুর ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। পুজোর সময় কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলেই এড়ানো যেতে পারে গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা। যারা গ্যাস অম্বলের সমস্যায় ভোগেন, তাদের পুজোর সময় অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো। হাতের কাছে সব সময় হজম ও গ্যাসের ওষুধ রাখা উচিত।‘
পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হলে বুঝতে হবে যে, আপনার অ্যাসিডিটির সমস্যা মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। বমি হলে সেই লক্ষণও এড়িয়ে না গিয়ে নিকটস্থ কোনও ডাক্তারের কাছে গিয়ে সমস্যার কথা বলুন।
চিকিৎসকের মতে, ‘রোজকার তালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এসব খাবারের তালিকায় রয়েছে বিনস, বাদাম, সবুজ শাকসবজি, দানাশস্য ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে ন্যাশপাতি, স্ট্রবেরি, আপেলের মতো ফল। এসব খাবার হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যায় মানুষকে কম ভুগতে হয়।’
নিরাময়ের ঘরোয়া টোটকা
• অ্যাসিডিটির সমস্যার সমাধানে এক নম্বরে রয়েছে জল। কিন্তু জল খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি জেনে নিতে হবে। একসঙ্গে নয়, বরং ধীরে ধীরে অনেকটা সময় ধরে জল খেতে হবে। জল হজম প্রক্রিয়া কার্যকর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
• রাস্তাঘাটে হাতের কাছে রাখুন জোয়ান। সামান্য অ্যাসিডিটির সমস্যা মনে হলেই খেয়ে নিন। জোয়ানের মধ্যে রয়েছে ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস। এই উপাদানগুলি হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। জোয়ান ভেজানো জল খেতে পারলে পেট ফাঁপার সমস্যা দূর হবে।
• ওজন কমাতে অনেকেই পাতিলেবু ব্যবহার করে থাকেন। অ্যাসিডিটির সমস্যা সমাধানেও এর তুলনা হয় না। এক গ্লাস জলে একটা গোটা পাতিলেবুর রস দিয়ে খেলে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়। এছাড়া হজমের সমস্যায় খুবই উপকারি হল বাতাবি লেবু।
• শুধু ত্বকের যত্নতেই নয়, অ্যাসিডিটির সমস্যা মেটাতেও বেশ কার্যকরী অ্যালোভেরা। এতে রয়েছে ল্যাকটেটিভ উপাদান, যা পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি বাড়ায় হজমশক্তি। অ্যালোভেরা কিউব স্যালাডে খাওয়া যেতে পারে। স্মুদি বা শরবত বানিয়েও খেতে পারেন।
• লিভারের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে জিরে কাজে লাগে। অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতেও এই উপাদানের উপর ভরসা করতে পারেন। জিরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-এ দ্রুত খাবার হজম হয়ে যায়। এক গ্লাস জলে জিরে ভিজিয়ে সেই জলটা খেলে উপকার পাবেন।