• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিলস দেখার আসক্তি ক্ষতিকারক

আপনি কি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক নাগাড়ে রিলস দেখায় আসক্ত? হাতে মোবাইলটা নিয়ে অনবরত স্ক্রোল করে চলেছেন রিলস ভিডিয়ো?

আপনি কি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক নাগাড়ে রিলস দেখায় আসক্ত? হাতে মোবাইলটা নিয়ে অনবরত স্ক্রোল করে চলেছেন রিলস ভিডিয়ো? এমনই সেই নেশা যে, সময়ের হিসেব থাকছে না? এই আসক্তি একটি অনিয়ন্ত্রিত প্রবণতা, যা আপনার সমস্ত মনোযোগ গ্রাস করে নেবে এবং করার মতো আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে আপনাকে বিরত করবে।
সোশ্যাল মিডিয়া এখন আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। আমরা সকলেই আমাদের নানা প্রয়োজনের জন্য অনলাইন বিশ্বের উপর নির্ভর করি। কিন্তু আপনি যদি প্রায়শই ফিড দেখা বা ভিডিও দেখায় মনোনিবেশ করেন- তখন এই লক্ষণ থেকে বুঝতে হবে যে, সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার আপনার ক্ষেত্রে একটি অস্বাস্থ্যকর এবং ক্ষতিকারক অভ্যাস হয়ে উঠেছে।
ক্ষতিকারক কারণ, খেয়াল করে দেখবেন এটি ক্রমাগত আপনাকে উদ্বিগ্ন বা বিরক্ত করে রাখবে। কোনও কারণে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে অ্যাক্সেস করতে অসুবিধা হলেই, বিরক্তির পারদ চড়বে। অথবা আপনি যে-পরিমাণ লাইক, কমেন্ট এবং ফলোয়ার পান, সেটা বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়ার নিরিখে আপনার মনের শান্তি বিঘ্নিত হবে। যদি সোশ্যাল মিডিয়া আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্কের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় অথবা কাজ বা কোনও শখের মধ্যে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে আপনার অনলাইন ব্যবহারের কু-অভ্যাসগুলি বজায় রাখবেন কিনা সেটা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
উদ্বেগ হল সোশ্যাল মিডিয়া বিঞ্জ ওয়াচিং-এর আরেকটি বিরূপ প্রভাব। উদ্বেগ, অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা এবং একাকীত্ব- এগুলি পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত। অর্থাৎ একটা হলেই অন্যটা আসবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলিতে আপনি যত বেশি সময় ব্যয় করবেন, অনুভূতিগুলি তত খারাপ হবে। এ এক আশ্চর্য চক্রব্যূহ যা থেকে নির্গমনের পথ আপনার জানা নেই। এছাড়া মনোবিদদের মতে, কারও সঙ্গে বন্ধন তৈরি না করে মনের সংযোগের আকাঙ্ক্ষা করা, একাকীত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বায়বীয় সম্পর্কের এই ফাটল আপনার মানসিক স্বাস্থ্য-সমস্যাগুলিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
আমরা যখন প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিলস স্ক্রোল করি, তখন আমরা হয়তো বুঝতে পারি না যে, অসচেতনভাবে আমাদের নিজেদের জীবনের সঙ্গে অবিরাম ওই কন্টেন্ট-এর তুলনা করে চলেছি। এটি অযোগ্যতা এবং হতাশার অনুভূতি যোগ করতে পারে। অনেকসময় সেটা ঈর্ষা বৃদ্ধি করে এবং জীবনের সন্তুষ্টি হ্রাস করে। বন্ধুদের পোস্টগুলিতে মন্তব্য করা, আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার মানসিকতায় বদল ঘটতে থাকে। এর পাশাপাশি সাইবার বুলিং এবং নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেটাও আপনার মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
সচেতনভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের কৌশল, আপনাকে অনলাইন এবং অফলাইন বিশ্বের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে। সামাজিক মাধ্যমকে এমনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করুন, যাতে আপনার অনলাইন অভিজ্ঞতা ইতিবাচক এবং উপভোগ্য হয়ে ওঠে। বন্ধুদের পোস্টগুলি শেয়ার করা এবং পছন্দ করা, এক ধরনের পরিপূর্ণতার অনুভূতি দেয়।

কীভাবে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবেন?

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনাকে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে। ফিড স্ক্রোল করা এবং পোস্ট দেখার জন্য দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে নিন।

শুধুমাত্র সেই অ্যাকাউন্টগুলি অনুসরণ করুন যা আপনাকে ইতিবাচক ভাবনা, সৃজনশীলতা এবং মানসিক শান্তি দেয়।

যে-ফিড নেতিবাচক আবেগ বয়ে আনে, সেগুলির ক্ষেত্রে আনফলো বোতামটি টিপুন।

সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যস্ত থাকাকালীন সচেতনভাবে আপনার মুড পরখ করুন। যদি লক্ষ্য করেন যে, ম্যারাথন স্ক্রল-এর পরে আপনার মেজাজ খারাপ হচ্ছে, তাহলে বিরতি নিন।

ভার্চুয়াল সংযোগের চেয়ে বাস্তব জীবনের সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিন। যদিও সোশ্যাল মিডিয়া যোগাযোগের একটি হাতিয়ার, তবে মুখোমুখি সম্পর্ক গড়ে তোলাও গুরুত্বপূর্ণ।