ন্যাশনাল হেলথ পোর্টাল ইন্ডিয়ার পরিসংখ্যান অনুসারে, এই মুহূর্তে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় যে-রোগগুলো, তার অন্যতম হল নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) লিভারের একটি গুরুতর অসুখ। পৃথিবীর প্রায় ৩০% মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। আফ্রিকার ১৩.৫% থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের ৩১.৮% মানুষ ফ্যাটি লিভারের কবলে পড়েছেন। ভারতে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০% মানুষের মধ্যে NAFLD রয়েছে বলে জানা গেছে।
লিভারকে ফ্যাটি বলে ধরা হয় তখন, যখন লিভারে ফ্যাট ৫%-এর বেশি হয়ে যায়। ডায়বেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ এবং মেদবহুলতায় ভোগা মানুষের ফ্যাটি লিভার হওয়ার সম্ভাবনা ৫০-৬০%। মোটামুটিভাবে ফ্যাটি লিভারের তিনটে স্তর আছে। ফ্যাটি লিভার – স্টেয়াটোসিস (NAFL), লিভার স্টেয়াটোহেপাটাইটিস (NASH) এবং লিভার সিরোসিস। NAFL রোগীদের ২০-২৫% NASH স্তরে পৌঁছে যান এবং ১০-১৫%-এর সিরোসিস অফ লিভার হয়, যা সারা পৃথিবীতে লিভার প্রতিস্থাপনের সবচেয়ে বেশি ঘটনার কারণ।
ফ্যাটি লিভার অধিকাংশ সময়েই ধরা পড়ে না, কারণ এই অসুখের প্রাথমিক স্তরে কোনও ব্যথা বা অস্বস্তি দেখা দেয় না। যাদের উপসর্গ আছে
তাদের যা হতে পারে-
n ক্লান্ত বা সাধারণত অসুস্থ বোধ করা
n পেটের উপরের ডানদিকে ব্যথা
n ওজন কমে যাওয়া।
তবে ফ্যাটি লিভার থেকে সমস্যা গুরুতর হলে, যে-লক্ষণগুলি দেখা যেতে পারে তার মধ্যে রয়েছে-
n চোখ এবং ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া (জন্ডিস)
n গাঢ় প্রস্রাব
n ফোলা পেট
n রক্ত বমি
n কালো মল
n ত্বকে চুলকানি
বাড়তে না দিয়ে এই রোগের যথাযথ পরীক্ষা নিরীক্ষা করা জরুরি। সেই কারণে লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) ও আল্ট্রাসাউন্ড (USG)-এর মতো স্বতঃপ্রণোদিত পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। ফাইব্রো স্ক্যান এবং MRI-PDFF এবং MR ইলাস্টোগ্রাফির মতো MRI ভিত্তিক পরীক্ষা হল, ফ্যাটি লিভারের সবচেয়ে উন্নত পদ্ধতির পরীক্ষা। এই টেস্টগুলি এই অসুখকে একেবারে প্রাথমিক স্তরেই ধরে ফেলতে সাহায্য করে, যা শেষ পর্যন্ত রোগীদের তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে সহায়তা দেয়।