• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

মিজোরামে ক্ষমতায় জেডপিএম, পরাজিত কংগ্রেস, ব্যাকফুটে বিজেপি 

দিল্লি, ৪ ডিসেম্বর –  মিজোরাম বিধানসভায় ক্ষমতায় আসতে চলেছে জোরাম পিপলস মুভমেন্ট বা জেডপিএম। ইতিহাস রচনা করে এই প্রথম সেখানে সরকার গঠন করতে চলেছে ছয় দলের এই জোট। ৪০ আসনের মিজোরাম বিধানসভায় নির্বাচন কমিশনের দেওয়া হিসেবে অনুযায়ী ২৭ টি আসনে জিতছে জেডপিএম। এবার মাত্র ১০টি আসনে জিতেছে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। হেরে গিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা এবং

দিল্লি, ৪ ডিসেম্বর –  মিজোরাম বিধানসভায় ক্ষমতায় আসতে চলেছে জোরাম পিপলস মুভমেন্ট বা জেডপিএম। ইতিহাস রচনা করে এই প্রথম সেখানে সরকার গঠন করতে চলেছে ছয় দলের এই জোট। ৪০ আসনের মিজোরাম বিধানসভায় নির্বাচন কমিশনের দেওয়া হিসেবে অনুযায়ী ২৭ টি আসনে জিতছে জেডপিএম। এবার মাত্র ১০টি আসনে জিতেছে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। হেরে গিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা এবং উপ মুখ্যমন্ত্রী টাউনলুইয়া। আসন কমেছে কংগ্রেসের। কংগ্রেস জিতেছে ১টি আসনে। ২০১৮ সালে ক্ষমতা হারালেও পাঁচটি আসনে জিতেছিল হাত শিবির। বিজেপি জিতেছে মাত্র ২টি আসনে।২০১৮ সালে তাদের দখলে ছিল মাত্র একটি আসন।
মিজোরামে ক্ষমতা এতদিন ছিল কংগ্রেস এবং এমএনএফ-এর হাতে। ঘুরে ফিরে তারাই মিজোরামে শাসন করেছে। গত নির্বাচনে সেখানে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে জোরামথাঙ্গার দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। এবারের নির্বাচনে আইজল পূর্ব- ১ আসনে হেরে গিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। সেই আসনে তাঁকে হারিয়ে জিতেছেন জেডপিএম দলের লালথানসাঙ্গা। এমএনএফের উপ-মুখ্যমন্ত্রী টাউনলুইয়াকে তাইচুঙ কেন্দ্রে  হারিয়েছেন জেডপিএম-এর ডব্লিউ চুয়ানাওমা।
পরাজিত হয়েছেন মিজোরামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমএনএফ দলের প্রার্থী আর লালথাংলিয়ানা। হেরেছেন মিজোরাম কংগ্রেসের সভাপতি। পলক আসনে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী কে হরহম।  অন্যদিকে, তিন রাজ্যে হারের পর মিজোরাম থেকেও শূন্য হাতেই ফিরতে হবে কংগ্রেসকে। মাত্র একটি আসন পেতে চলেছে তারা। 
জেডপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিচ্ছেন লালডুহোমা । সেরচাপ আসনে জিতেছেন তিনি। লালডুহোমা জিতেছেন ২৯৮২ ভোটে। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করার জন্য দাবি জানানো হবে। মঙ্গলবারই মিজোরামের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন লালডুহোমা। তিনি জানান, চলতি মাসেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। প্রথমে শপথ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী। লালডুহোমা জানান, সেখানে কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়নে নজর দেবেন তাঁরা। তাঁদের ইস্তাহারে কৃষি এবং কৃষকদের উন্নতি করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। এরই সঙ্গে সেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালানো হবে বলেও জানান তিনি। তাঁরা ইস্তাহারে যে প্রতিশ্রুতি গুলি দিয়েছিলেন সেগুলি পূরণ করা হবে।
৪০টি আসনের মিজ়োরাম বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদুসংখ্যা ছিল ২১। শাসক দল মিজ়ো ন্যাশনাল ফ্রন্ট , প্রধান বিরোধী জ়োরাম পিপলস‌্ মুভমেন্ট এবং প্রাক্তন শাসক দল কংগ্রেস সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল। বিজেপি লড়েছিল ২৩টি আসনে।
নির্বাচনী ইতিহাস বলছে, প্রতি দশকে মিজ়োরামে সরকার পাল্টায়। সেই ধারা মেনেই ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সরকার পাল্টে দিয়েছিলেন মিজ়োরা। ক্ষমতায় এসেছিল মিজ়ো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। অর্থাৎ, ভোটের ধারা মেনে এ বারও তাদের ক্ষমতায় থাকার কথা। ২০১৮-র ওই ভোটে এমএনএফ মিজ়োরামের ৪০টি আসনের মধ্যে জিতেছিল ২৭টিতে। গত বার জেডপিএম ৮টি আসন পেয়েছিল। কিছু সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছিল এবার লালডুহোমার দলই মিজ়োরামে ক্ষমতায় আসতে চলেছে। সেক্ষেত্রে  পাঁচ বছরের ব্যবধানেই সরকার বদল হল এই রাজ্যে।
চার রাজ্যের মধ্যে তিনটি রাজ্যে গেরুয়া দল জিতলেও মিজ়োরাম এখনও বিজেপির অস্বস্তির কারণ। শাসকদল এমএনএফ ২০১৬ সাল থেকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ‘নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স’-এর সদস্য। কিন্তু সম্প্রতি বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে এমএনএফ, কারণ মণিপুরের  হিংসা।
বাস্তব বলছে, বিধানসভা নির্বাচনে ৪০ আসনের ফলাফল যা-ই হোক, একটি লোকসভা আসনের মিজ়োরাম নিয়ে বিজেপি বা কংগ্রেস, কারও আর সে ভাবে কোনও মাথাব্যথা নেই। তবে অনেকের মতে, মিজ়োরাম বিধানসভার ভোটের ফলাফল প্রভাব ফেলতে পারে উত্তর-পূর্বের বাকি রাজ্যে। সে ক্ষেত্রে ধাক্কা খেতে পারে অমিত শাহের ‘কংগ্রেসমুক্ত উত্তর-পূর্ব ভারত’-এর লক্ষ্য।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালে মিজোরাম পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়। এর পর থেকেই উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে কংগ্রেস ও এমএনএফ-এর দাপট দেখা যায়।  এই প্রথম রাজ্যে অন্য জোট সরকার গঠন করতে চলেছে।