লখনউ, ২৫ নভেম্বর – উত্তরপ্রদেশে শনিবার প্রাণীহত্যা নিষিদ্ধ করল উত্তরপ্রদেশ সরকার। শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক থানওয়ারদাস লীলারাম বাসওয়ানির জন্মদিন উপলক্ষে এই দিনটিকে বিশেষ ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তাই ২৫ নভেম্বর রাজ্যের সব মাংসের দোকান, কসাইখানা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
ভারতে শিক্ষার প্রচার এবং প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন শিক্ষাবিদ সাধু থানওয়ারদাস লীলারাম বাসওয়ানির। নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অপরিসীম। বাসওয়ানি মহিলাদের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করতেন। সঠিক শিক্ষা পদ্ধতিতে তাঁদের শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্যে ১৯৩৩ সালে ‘মীরা মুভমেন্ট’ গড়ে তোলেন তিনি। মেয়েদের জন্য হায়দরাবাদে সেন্ট মীরা’স স্কুলও তৈরি করেন তিনি। তাঁর জীবন, কর্মকাণ্ডের ইতিহাস সংরক্ষিত রয়েছে পুণের দর্শন সংগ্রহশালায়।
কয়েক দিন আগেই উত্তর প্রদেশে হালাল শংসাপত্র দেওয়া খাদ্যপণ্য নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ইসলাম ধর্মে এই ‘হালাল’ রীতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা এই হালাল রীতিতে তৈরি খাবার ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করেন না। মাংস, ওষুধ থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় বহু জিনিসই এই পদ্ধতি মেনে তৈরি করা হয়। জনস্বার্থের কথা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি তরফে জানানো হয়েছে। এদিকে গোটা দেশে এই রীতি চালু হতে পারে বলে এমন গুঞ্জন শুরু হয়। শনিবার হায়দ্রাবাদে ভোটের প্রচারে গিয়ে এই নিয়ে মুখ খোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘দেশে হালাল সামগ্রী কেনাবেচার উপর নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে কেন্দ্র এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
যোগী রাজ্যে আর হালাল সার্টিফিকেট যুক্ত কোনও পণ্য বিক্রি এবং ক্রয় করা যাচ্ছে না। একাধিক সংস্থার বিরুদ্ধে ভুয়ো সার্টিফিকেটের অছিলায় হালাল পণ্য বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। এই নিয়ে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছিল লখনউতে। এরপরই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।যোগী আদিত্যনাথ সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। এবার থেকে হালাল সার্টিফিকেট যুক্ত কোনও পণ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিতরণ এবং বিক্রয় করা যাবে না ।
পুলিশ সূত্রে খবর, হালাল সার্টিফিকেট যুক্ত একাধিক পণ্য ব্যবসার আড়ালে নানা জঙ্গি সংগঠনগুলিকে সাহায্য করা হত। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস হালাল সার্টিফিকেটের নামে বিক্রির অছিলায় এই দেশবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি। বেআইনি ব্যবসার এই রমরমা বন্ধ করতেই যোগী সরকারের এই কড়া পদক্ষেপ।