লাদাখে বিশ্বের সর্বোচ্চ যুদ্ধবিমান ঘাঁটি, বেজিংকে বার্তা দিল্লির 

দিল্লি, ১০ সেপ্টেম্বর –  জি -২০ সম্মেলন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বড় ঘোষণা ভারতের। লাদাখের নিওমায় বিশ্বের সর্বোচ্চ যুদ্ধ বিমানঘাঁটি তৈরি করবে ভারতের বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন।  ভারতের এই পদক্ষেপ ভাবনার কারণ হতে পারে চিনের। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর জম্মুর দেবক সেতু  থেকে এই যুদ্ধবিমান ঘাঁটি তৈরির শিলান্যাস করবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। রবিবার শেষ হল জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। সেখানেই রবিবার এই বিমানঘাঁটি তৈরির কথা ঘোষণা করেন নরেন্দ্র মোদি । 
 
পূর্ব লাদাখের নিওমায় এই বিমানঘাঁটি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়ছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীন বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনকে। এই নতুন এয়ারফিল্ড নির্মাণে মোট ব্য়য় হবে ২১৮ কোটি টাকা । সীমান্তে চিনকে কঠিন বার্তা দিতে এই বিমানঘাঁটি নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। 

পূর্ব লাদাখের নিওমা অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড তিন বছর আগে ছেকে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। চিনের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাতের সময় থেকেই  সৈন্য এবং রসদ সরবরাহ চলে আসছে । সেই সময় থেকেই ভারতীয় সেনা ও পণ্যসামগ্রী পরিবহনের জন্য ওই গ্রাউন্ডটি ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে নিয়মিত ওঠানামা করতে দেখা গিয়েছে ভারী ওজন বহনে সক্ষম চিনুক হেলিকপ্টার এবং সি-১৩০জে যুদ্ধবিমানকে। এই অঞ্চলেই বিমানঘাঁটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূর্ব লাদাখের গালভানে ভারত ও চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশের মধ্যেই এখনও উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি।  সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের এই পদক্ষেপ চিনের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। 
জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও, শেষ মুহূর্তে জানানো হয় আসতে পারছেন না বলে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।তার বদলে সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে এসেছেন চিনা প্রিমিয়ার লি কোয়াং। চিন যতই দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন না কেন, ভারত বরাবরের মতোই বন্ধুত্ব ও সম্প্রীতির হাত বাড়িয়ে দেয় চিনের দিকে। শনিবার, জি-২০ সম্মেলনের প্রথমদিনে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চিনের প্রশংসা করে বলেন, একাধিক ক্ষেত্রে চিনের সমর্থন মিলেছে। জি-২০ সম্মেলনে চিনের প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন উঠলে তার জবাবে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, “কোন স্তর থেকে প্রতিনিধিত্ব করা হবে, এটা সেই দেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আমার মনে হয় না এই নিয়ে অন্য কোনও অর্থ বের করা উচিত। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সেই দেশ কী অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং বৈঠকের ফলাফলে পৌঁছতে সেই দেশের অবদান কতটা। আমি বলতে চাই, একাধিক বিষয়ে চিন অনেক সহযোগিতা করেছে।”

তবে হঠাত কী কারণে জিনপিংয়ের ভারতে আসার পরিকল্পনা বাতিল হয় তা নিয়ে চিনের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে,  ভারত-চিনের দীর্ঘকালীন বিরোধ এবং সম্প্রতি চিনের নতুন মানচিত্রে অরুণাচল প্রদেশ ও আকসাই চিনকে নিজেদের দেশের অংশ বলে দাবি করাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক স্তরে যে বিতর্ক ও সমালোচনার ঝড় ওঠে , তার জন্যই ভারত সফর এড়িয়ে যান শি জিনপিং।

তবে এলএসি নিয়ে চিনের সঙ্গে বিবদমান উত্তেজনার মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এই বিশ্বের সর্বোচ্চ যুদ্ধ বিমানঘাঁটি নির্মাণের সিদ্ধান্তকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।