ওয়াশিংটন, ২১ অক্টোবর– গত ৮ মাস ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে দু’ভাগে বিভক্তি বিশ্ব। রাশিয়া-চিন-ইরান অক্ষের বিরুদ্ধে পরোক্ষে লড়াই চলছে আমেরিকা ও ন্যাটো জোটের। ফলে এই সংঘাত যে কোনও মুহূর্তে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে তাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এহেন পরিস্থিতিতে আমেরিকার দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধে এবার সরাসরি শামিল হয়েছে ইরানের সেনা।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জনসংযোগ ব্যবস্থাপক জন কিরবি দাবি করেছেন, ইউক্রেনের রুশ অধিকৃত ক্রাইমিয়া অঞ্চলে পৌঁছে গিয়েছে ইরানি ফৌজের একটি বিশেষ দল। রুশ সেনাদের ড্রোন চালনার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা। সিএনএনকে কিরবি বলেন, “আমরা নিশ্চিত যে ক্রাইমিয়া থেকেই ইরানের ড্রোনগুলি চালাচ্ছে রুশ পাইলটরা। কিয়েভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালানো হচ্ছে এই ড্রোনগুলি দিয়ে। ইরানে মজুত রয়েছে ইরানি সেনার বিশেষজ্ঞ দল। তারাই রুশ ফৌজয়েক ড্রোন হামলায় মদত দিচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, এবার ইউক্রেন যুদ্ধে সরাসরি শামিল হয়েছে তেহরান।
সম্প্রতি ইউক্রেনে আতঙ্কের আরও এক নাম হয়ে উঠেছে ‘কামিকাজে ড্রোন’। আত্মঘাতী এই জাংগুলি ঝাঁকে ঝাঁকে আছড়ে পড়ছে ইউক্রেনে। কিয়েভের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের বাড়িঘর ও বহুতলগুলিকে নিশানা করছে রুশ ড্রোন। এভাবে আতঙ্ক তৈরি করতে চাইছে পুতিন বাহিনী। আর লাগাতার ব্যর্থতার জেরে উৎপণ্য হতাশা থেকেই এমনটা করছে তারা।
আমেরিকা ও ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়াকে এই কামিকাজে ড্রোন দিচ্ছে ইরান । এগুলির নাম ‘শাহেদ-১৩৬’। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, এমন প্রায় ২ হাজার ৪০০টি ড্রোন কিনেছে মস্কো। যদিও তা দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। বিশ্লেষকদের মতে, ক্রুজ মিসাইলের তুলনায় এই কামিকাজে ড্রোনগুলি অনেকটাই সস্তা। একটি ড্রোনের মূল্য প্রায় ২০ হাজার ডলার। কয়েকশো কিলোমিটার দূরে হামলা চালাতে সক্ষম এগুলি। সুদূর ঘাঁটি থেকে বসে এই ড্রোনের মাধ্যমে শত্রুর উপর নজর রাখা যায়। তারপর নিশানার দেখা মিললেই আকাশ থেকে বজ্রের মতো আছড়ে পরে খেল খতম করে দেয় এই অস্ত্র। ঝাঁকে হামলা করে বলে ইউক্রেনের মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমও এগুলিকে সম্পূর্ণভাবে রুখে দিতে অক্ষম।