সোমবার বিকেলে টেংনুপাল জেলায় হিংসার বলি হলেন কমপক্ষে ১৩ জন। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এদিন দুপুরের দিকে টেংনোপাল জেলার সাইবোলের কাছের লেইথু গ্রামে দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। গুলির লড়াই চলে। ওই এলাকা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ছিল নিরাপত্তা বাহিনী। সেখান থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে, লেইথু গ্রামে ঢুকে বাহিনির সদস্যরা ১৩টি দেহ উদ্ধার করে। তবে, তাদের পাশে কোনও অস্ত্রশস্ত্র ছিল না। নিরাপত্তা কর্মীরা আরও জানিয়েছেন, মৃত ব্যক্তিরা লেইথু গ্রাম বা আশপাশের এলাকার নয়। তারা সম্ভবত, অন্য জায়গা থেকে সেখানে এসেছিল এবং অপর এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের গুলির লড়াই বাধে।
নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। মণিপুর পুলিশের এক কর্তা বলেছেন, “পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করবে,” । নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইবোল থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে এক এলাকায় মৃতদেহগুলি পাওয়া গিয়েছে। ওই এলাকায় এর আগে পর্যন্ত কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। তবে, সাইবোলে অতি সম্প্রতি অসম রাইফেলসের একটি টহলদারি গাড়ির উপর আইইডি হামলা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় যদিও দুই জওয়ান সামান্য আঘাত পান, বাকিরা অক্ষত ছিলেন।
গত ৩ মে থেকে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা এখনও অব্যাহত মণিপুরে। এই সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ৫০,০০০ মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছেন। এর জেরে রাজ্যে গত সাত মাস ধরে প্রায় একটানা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে, সম্প্রতি হিংসার ঘটনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। মেইতেই এবং কুকি অধ্যুষিত জেলাগুলির সীমান্ত বরাবর বিক্ষিপ্তভাবে হিংসা অব্যাহত থাকলেও, রাজ্যের বেশ কিছু উপদ্রুত এলাকায় শান্তি ফিরে এসেছে বলে, জানিয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনী। তাই, গত রবিবারই মণিপুর সরকার ওই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি বাদ দিয়ে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয় ।
প্রসঙ্গত বলা যায়, কুকি-মেইতেই গোষ্ঠী সংঘর্ষের সুযোগ নিয়ে হিংসার আগুন উস্কে দিচ্ছে জঙ্গি সংগঠনগুলো, এমনই রিপোর্ট দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। এই পরিস্থিতিতে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে শান্তি ফেরাতে গত মাসেই বড় পদক্ষেপ করে কেন্দ্র। ৯টি মেই তেই জঙ্গি দলকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।