তিহাড়ে অনুব্রত ও সুকন্যার সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূলের দুই সাংসদ 

দিল্লি, ২ জুন – অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নিতে তিহাড়ে গেলেন তৃণমূলের দুই সাংসদ। অনুমতি নিয়ে শুক্রবার সকাল ১১ তা নাগাদ পৌঁছে যান তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন এবং বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল৷ এদিন অনুব্রত মন্ডল ও সুকন্যা মন্ডলের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন তাঁরা।দেখা করে বেরিয়ে এসে দোলা সেন জানান, অনুব্রত ও সুকন্যা শারীরিক ভাবে সুষ্ঠ রয়েছেন। পাশাপাশি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ করার অভিযোগ তোলেন দোলা সেন। বিচারাধীন বন্দি হওয়া সত্ত্বেও ‘অকারণে’ অনুব্রত এবং তাঁর কন্যাকে দূরে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দোলা।পাশাপাশি, দল যে অনুব্রত মন্ডলের পাশে রয়েছে, সেই বার্তাও তাঁর কাছে পৌঁছে দেওয়া হল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

বেশ কিছুদিন ধরেই তিহাড় জেলে বন্দি অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। কিন্তু অনুমতি পাওয়া যায়নি। এবার সেই অনুমতি মিলতেই সাংসদ দোলা সেন ও অসিত মাল যান অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করতে। তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। বেশ কিছুক্ষণ সময় সেখানে কাটানোর পর বেরিয়ে আসেন তাঁরা।  দোলা সেন বলেন, “সুকন্যা রাজনীতিতেই ছিল না। কিন্তু বাবাকে চাপ দেওয়ার জন্যই ওকে গ্রেফতার করা হল। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।”  বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক কারণে আমাদেরও শাস্তিভোগ করতে হতে পারে।”  গরুপাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এমনকী তাঁর পদও এখনও শূন্য রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবারই গরুপাচার মামলায় সুকন্যা মণ্ডলের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদনের শুনানিও স্থগিত রয়েছে। সোমবার থেকে গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় আগামী এক মাস আর এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে চলতি মাসেও তিহাড় জেলেই কাটাতে হবে অনুব্রত ও সুকন্যাকে।


সুকন্যা মন্ডলের জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় গত শুক্রবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংয়ের এজলাসে। আইনজীবীরা বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে আদালতের কাছে জামিন আর্জি জানান।সেদিন সুকন্যার আইনজীবী বলেন, ইডির চার্জশিটে গরু পাচার মামলায় ধৃত বিএসএফের  ক্যাপ্টেন সতীশ শর্মার স্ত্রী তানিয়া সান্যালের নামও রয়েছে। অথচ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। এদিকে  গত এক বছর ধরে চিকিৎসা চলছে অনুব্রত কন্যা সুকন্যার। তার অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা জুন মাসে। সেই কারণ দেখিয়ে আদালতে জামিনের আবেদন জানানো হলেও তা বৃহস্পতিবার খারিজ হয়ে যায় ।

রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে অনুব্রত জানিয়েছিলেন তার শরীর ভালো নয়। জেলের বাইরে গিয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন। সেই শুনানিও পিছিয়ে যায় গরমের ছুটির কারণে। তাই আপাতত তিহাড়ই ঠিকানা অনুব্রত ও সুকন্যার। ১০ জুলাই হবে অনুব্রতর শুনানি। সুকন্যার জামিনের শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ৯ অগস্ট। 

ইতিমধ্যে অনুব্রত তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের নামে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। গত ২৪ মে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।এর আগে সিবিআই অনুব্রত মণ্ডলের ১৭ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। মোট ২৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ,  যার কোনওটা সংস্থার নামে কোনওটা অনুব্রত বা তাঁর মেয়ের নামে।