বিষ খাইয়ে মেয়েদের পড়াশুনা বন্ধ করার চেষ্টা ইরানে, স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব
SNS
তেহরান,২৭ ফেব্রুয়ারি —ইরানে নারী স্বাধীনতার এক নমুনা প্রকাশ্যে এসেছে। এই খবরে শিউরে উঠেছে আধুনিক বিশ্ব। মেয়েদের পড়াশুনো বন্ধ করতে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার ঘটনা স্বীকারও করে নিয়েছেন সেই দেশের উপ স্বাস্থমন্ত্রী ইউনুস পানাহি। গত নভেম্বর থেকে ইরানের কওম শহরে একাধিক ছাত্রীর শরীরে বিষক্রিয়ার প্রমাণ মিলেছে। অনেককে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালেও। ইচ্ছাকৃত ভাবেই ছাত্রীদের বিষ খাওয়ানো হয়েছে বলে তিনিও খবর পেয়েছেন। মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার জন্য এই কৌশল।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯ বছরের তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে উত্তপ্ত ইরান। সেই উত্তেজনার রেশ এখনও কাটেনি। অভিযোগ, হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ পুলিশ মাহশাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। তার পর হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের অত্যাচারেই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ইরানের শয়ে শয়ে নাগরিক প্রতিবাদে পথে নামেন। মহিলারা প্রকাশ্যে চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদে শামিল হন। ইসলামি রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে সেই প্রতিবাদের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছিল আন্তর্জাতিক স্তরেও। ইরান সরকার অবশ্য কঠোর হাতে এই প্রতিবাদী নাগরিকদের দমন করেছে।
ইরানের রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে কওম শহর। ছাত্রীদের শরীরে বিষক্রিয়ার ঘটনা বেশিরভাগ প্রকাশ্যে এসেছে সেখানেই। এ ছাড়া, কওমের বাইরেও এই কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ইরানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত উপ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, ‘‘কওমের স্কুলগুলিতে বহু ছাত্রীর বিষক্রিয়ার খবর পাওয়ার পর তদন্ত করে দেখা গিয়েছে, ইচ্ছাকৃত ভাবে এই কাজ করা হয়েছে। যাঁরা এটা করেছেন, তাঁরা চান, সমস্ত স্কুল, বিশেষত মেয়েদের স্কুল বন্ধ হয়ে যাক।’’ কিন্তু এর চেয়ে বেশি কিছু জানাননি মন্ত্রী। কারা এই কাজ করে থাকতে পারেন, কাদের দিকে সন্দেহের তির, সে সব কিছুই স্পষ্ট নয়। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও গ্রেফতারিও হয়নি ইরানে।
বিষক্রিয়ায় ভুগতে থাকা ছাত্রীদের অভিভাবকেরা গত ১৪ ফেব্রুয়ারি স্কুলগুলির সামনে জড়ো হয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে এর ব্যাখ্যা চান। তার পরের দিন ইরান সরকারের মুখপাত্র আলি বাহাদোরি জাহরোমি জানান, দেশের গোয়েন্দা এবং শিক্ষামন্ত্রক বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। কী ভাবে ছাত্রীদের শরীরে বিষ ঢুকল, তার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।