সিগারেটের যম গলার এই লকেট 

আমেরিকা ,১৫ ফেব্রুয়ারি — হর গম ধুয়েঁ মে উড়ায় যা। এই ভেবেই বোধয় কমবয়সি থেকে মাঝবয়সি থেকে প্রবীণ সকলেই সিগারেটের মোহে মজে। যতই শরীরের আনাচ কানাচে রোগ বাসা বেঁধে থাকুক না কেন, সিগারেট না টানলে স্বস্তি হয় না। ধূমপানের ক্ষতি কতটা সেটা প্রচার করেও লাভ হচ্ছে না। কম খাচ্ছি ভেবেও দিনে কতগুলো সিগারেটে টান দিয়ে ফেলছেন তার হিসেবও থাকছে না। আর কী পরিমাণ বিষ শরীরে ঢুকছে সেটা বুঝতেও পারছেন না। এবার তারই হিসেব দিতে আসছে নেকলেস ।

সিগারেট ছাড়তে চাইলে এই নেকলেস পরতেই হবে। কোনও অবাস্তব ব্যাপার নয় বা গল্পকথাও নয়, সিগারেট ছাড়ানো এবং সিগারেটে ক্ষতি কতটা সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর জন্যই এমন নেকলেস বানানো হয়েছে। গলায় পরলেই সেটি অ্যাকটিভ হয়ে যাবে। এবার দিনে কতবার সুখটান দিচ্ছে, কটা সিগারেট টানছেন, আর তাতে কী কী বিষ কী পরিমাণে শরীরে ঢুকছে তার সবই বিস্তারিত বলে দেবে এই নেকলেস। অনেকটা অ্যালার্ম দেওয়ার মতো করে সতর্ক করবে।

আমেরিকার নর্থওয়েন্টার্ন মেডিসিন রিসার্চের গবেষকরা এমন নেকলেস বানিয়েছেন যা ধূমপান রুখতে সাহায্য করবে। এই নেকলেসের নাম ‘স্মোকমন’ । নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক নাবিল আলসুরাফা বলছেন, এই নেকলেস বাইরে থেকে বোঝা যাবে না। গোপনীয়তা রক্ষা করবে। একজন ধূমপায়ী এটি পরে থাকলে সারাদিনে কটা সিগারেট টানছেন এবং কতটা ক্ষতি হচ্ছে শরীরের সেই তথ্য দিয়ে দেবে। প্রতিদিন এই রিপোর্ট দেখতে দেখতে ধূমপানে কতটা ক্ষতি হচ্ছে তা নিজেই বুঝতে পারবেন ধূমপায়ী। তাছাড়া যাঁরা মনে করছেন সিগারেট ছাড়বেন কিন্তু পারছেন না, সুখটান কমিয়ে এনেও দিনে কটা সিগারেটে টান দিয়ে ফেলছেন বুঝতে পারছেন না, তাঁদের জন্যও অ্যালার্মের কাজ করবে এই নেকলেস।

গবেষক বলছেন, এটা জেনে রাখা দরকার একটা টান দেওয়ার পরে ঠিক কী কী ঢুকছে শরীরে। সিগারেটের উপাদানে আছে আর্সেনিক, টয়লেট ক্লিনারে ব্যবহৃত অ্যামোনিয়া, কীটনাশক ডিডিটি, নেলপলিশ রিমুভার অ্যাসিটোন, ব্যাটারিতে ব্যবহৃত ক্যাডমিয়াম, নিকোটিন-সহ আরও প্রায় ৭০০০ রকমের বিষ! ফুসফুসের রোগ, হাঁপানি তো আছেই, ধূমপানে বাড়ে পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজের আশঙ্কা। অর্থাৎ পা-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশের রক্তবাহী ধমনিতে কোলেস্টেরলের প্রলেপ জমে রক্ত চলাচল কমে যায়। সব থেকে বেশি সমস্যা হয় পায়ে। ধূমপায়ীদের এই অসুখের আশঙ্কা অন্যদের থেকে ১৬ গুণ বেশি। মধ্য বয়সে পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ জনিত পায়ের ব্যথার রোগীদের ৯৫% ধূমপায়ী। এই ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার যুগে এমনতিও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে বেশিরভাগ মানুষজনেরই। তার মধ্যে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো শরীরে আর বিষ ঢুকিয়ে লাভ কি! অতএব সুস্থভাবে বাঁচতে হলে ধূমপান ছেড়ে দেওয়াই মঙ্গলের।