দিল্লি, ৩০ সেপ্টেম্বর – কানাডার সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে টানাপোড়েনের জের পড়ছে ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের ক্ষেত্রেও। খালিস্তানি নেতা নিজ্জরকে নিয়ে বিতর্কে হোয়াইট হাউসের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট নয় নয়াদিল্লি। তারই ইঙ্গিত পাওয়া গেল বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের কথায়। শুক্রবার ওয়াশিংটনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জয়শংকর বলেন, “আমি শুনেছি আমেরিকা কী মতামত দিয়েছে। আশা করছি আমি কী বলেছি সেটাও ওয়াশিংটন বুঝতে পেরেছে। দু’দেশই নিজেদের চিন্তাধারা সম্পর্কে অবগত। এর থেকে বেশি কিছু আমার বলার নেই।” এরপরই তিনি খালিস্তান প্রসঙ্গ তোলেন। জয়শংকর স্পষ্ট জানান, “কানাডা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আখড়া হয়ে উঠেছে, যা খুবই উদ্বেগজনক। আমাদের উচিত এই নিয়ে প্রশ্ন তোলা। ভারত সব সময় এর বিরোধিতা করবে। আমেরিকা যখন কানাডা নিয়ে কথা বলে তখন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অন্যরকম থাকে। আমরা যখন কানাডা নিয়ে কথা বলি তখন আমরা অনেক কিছু খুঁজে পাই। এনিয়ে আমেরিকার সঙ্গে কথা বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দৃঢ়।” এখানেই বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের যতই মজবুত সম্পর্ক হোক না কেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের নাক গলানো মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না নয়াদিল্লি।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসংঘে কানাডা প্রসঙ্গ নিয়ে সরব হয়েছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। এই প্রেক্ষাপটে তিনি বৈঠকে বসেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে। জল্পনা ছিল তাঁদের বৈঠকে উঠতে পারে কানাডা প্রসঙ্গ। প্রথমে শোনা যায়, তাঁদের বৈঠকে নাকি কানাডা নিয়ে কোনও কথাই হয়নি। সাংবাদিক সম্মেলনে খলিস্তান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে যান মার্কিন বিদেশ সচিব। কিন্তু পরে জানা যায় তাঁদের মধ্যে কানাডারতোলা অভিযোগ নিয়ে কথা হয়েছে। এই বিষয়ে ব্লিঙ্কেন নিজেই জানিয়েছেন, ভারতের বিরুদ্ধে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যে অভিযোগ তুলেছেন তা খুবই গুরুতর। আমেরিকা এনিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।
আমেরিকা আগেই খালিস্তানি বিতর্কে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তাদের সাফ বার্তা কানাডার অভিযোগ যদি সঠিক প্রমাণিত হয় তাহলে এই ঘটনার নেপথ্যে যারা রয়েছে তাদের বিচারব্যবস্থার সম্মুখীন হতে হবে। পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়, কানাডাকে তদন্তে সহযোগিতা করার। বিশ্লেষকদের মতে, কানাডা ও ভারত কোনও দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক খারাপ করতে চাইছে না ওয়াশিংটন। কারণ দুদেশের সঙ্গেই আমেরিকার রাজনৈতিক, সামরিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে।