প্রয়োজন নেই স্থায়ীপদের, ৮ হাজার শিক্ষক পদের অবলুপ্তির সিদ্ধান্ত অসমের বিজেপি সরকারের

দিশপুর, ১০ নভেম্বর– শুধু বঙ্গ নয় অসমে চাকরি পেতে মরিয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্দোলন অব‌্যাহত। এই পরিস্থিতির মধ্যেই অসমের বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্তে আরও বেকায়দায় আন্দোলনের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রাজ্যের স্কুলগুলি থেকে স্থায়ী শিক্ষকের পদ তুলে দিতে পদক্ষেপ করছে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার । প্রায় ৮ হাজার স্থায়ী পদ বিলোপ করা হচ্ছে। রাজ‌্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা সামনে আসতেই এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তবে এই প্রসঙ্গে অসম সরকারের যুক্তি, সর্বশিক্ষা অভিযানের আওতায় চুক্তিভিত্তিতে বহু মানুষ কাজ করছেন। তাই স্থায়ীপদে নিযুক্তির প্রয়োজন নেই।

স্থায়ী শিক্ষকের পদ অবলুপ্তির জন‌্য সরকারি চিঠি পৌঁছে গিয়েছে সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে। রাজ্যের শিক্ষাসচিব বিজয়া চৌধুরি অসমের অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলকে চিঠি দিয়েও সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। নির্দেশ দিয়েছেন স্থায়ীপদ বিলোপের। নিম্ন প্রাথমিকে ৪,২৮৫ এবং উচ্চ প্রাথমিকে ৩,৭১৫ শূন্যপদ বিলুপ্ত হচ্ছে। 

সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, অসমের শিক্ষামন্ত্রী রনোজ পেগু জানিয়েছেন, রাজ্যে এই মুহূর্তে চুক্তিভিত্তিতে নিম্ন এবং উচ্চ প্রাথমিকে ১১ হাজার ২০৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা কাজ করছেন। ২০২০ সালে স্থায়ী চাকরির মতোই তাঁদের বেতন এবং অন্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারিত করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। চাকরির মেয়াদকালও ৬০ বছর পর্যন্ত করা হয়েছে। তাই যুক্তিসঙ্গত ভাবেই ৮ হাজার স্থায়ীপদ ফাঁকা রেখে অর্থনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওই ৮ হাজার স্থায়ী শূন্যপদে আর কোনও নিয়োগ হবে না। অন্তত যতদিন পর্যন্ত না চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা অবসর নিচ্ছেন, ততদিন শূন‌্যই থাকবে ওই ৮ হাজার পথ। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই ওই পদগুলি আপাতত বিলোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অসমের বিজেপি নেতৃত্বের সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে কংগ্রেস-সহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। বিরোধিতায় নেমেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনও। তাদের দাবি, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় ভাষায় পড়াশোনার মাধ্যম যে স্কুলগুলিতে, তাদের স্বার্থবিরোধী। অসম জাতীয় পরিষদের সভাপতি লুরিনজ্যোতি গগৈয়ের দাবি, স্থায়ীপদ অবলুপ্তির এই সিদ্ধান্ত অদূরদর্শিতার পরিচয়। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থারও পরিপন্থী। তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষার স্কুলগুলির বিরুদ্ধে সরকারের এমন ষড়যন্ত্র পুরনো হয়ে গিয়েছে। হাজার হাজার স্থায়ীপদ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক বিষয়। কোনও মতেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়।”