দিল্লি , ২০ এপ্রিল – মাদক ব্যবহার রোধ করতে কড়া পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। মাদকের চোরাচালান রুখতেও আরও কঠোর পদক্ষেপ করা হবে । বুধবার এক কর্মসূচিতে মাদকের চোরাচালান রুখতে এই বার্তা দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি এদিন বলেন, “২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত মাদকমুক্ত দেশ হয়ে উঠবে।” এই কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে অগ্রাধিকার বলে জানান শাহ। তবে এই বিষয়ে রাজ্যগুলিকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বুধবার ছিল সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের অ্যান্টি নারকোটিক্স টাস্ক ফোর্সের একটি আলোচনা সভা । সেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “শুধু মাদক সেবন করেন যাঁরা তাঁদের নয়, এনসিবি বা নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর উচিত মাদক পাচারকারী তথা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। শাহের বক্তব্য , যাঁরা মাদক গ্রহণ করেন তাঁরা মাদক ব্যবসায়ীদের শিকার। সুতরাং প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ মাদকজনিত সন্ত্রাস দেশের নিরাপত্তা এবং অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে ।
তিনি এদিন আরও বলেন, “রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত। কোন রাজ্যে কোন দলের সরকার রয়েছে , তা না দেখে সবার অনমনীয় নীতি নিয়ে এগোনো উচিত।” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদকের ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করার কথা বলেন। তিনি বলেন “কারও কাছে যদি এক প্যাকেটও মাদক পাওয়া যায়, তবে সেই মাদক সে কোথায় পেল, তার খোঁজ করতে হবে।” পঞ্জাবের মতো দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যে মাদক চোরাচালান নিয়ে বারবারই সরগরম হয়েছে স্থানীয় রাজনীতি। এমনকি পঞ্জাবের পলাতক খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংহের বিরুদ্ধেও মাদকের চোরাচালানে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এই আবহে শাহের মাদক বিরোধী বার্তাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।
মাদক রোধে নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগ ও সাফল্যের খতিয়ান দেন অমিত শাহ। জানান, ২০২২ সালের জুন মাস থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ৬ লক্ষ কেজি মাদক আটক করা হয়েছে। ৭০০০ কোটি টাকার মাদক পুড়িয়ে ফেলে নষ্ট করা হয়েছে। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর পরিসংখ্যান উল্লেখ করেই এই কথা জানান শাহ।
পাঞ্জাবের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যে মাদকের চোরাচালান স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলে। পাঞ্জাবের পলাতক নেতা অমৃতপাল সিংহের বিরুদ্ধেও মাদকের চোরাচালানে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে। এই আবহে শাহের মাদক বিরোধী বার্তাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। এছাড়াও তরুণ প্রজন্মের কথাও উঠে এসেছে অমিত শাহের বক্তব্যে। তিনি বলেছেন , ‘বর্তমান প্রজন্মকে ভিতর থেকে ফাঁকা করে দিচ্ছে মাদক। দেশের অর্থনীতিতেও এর বহু খারাপ প্রভাব পড়ছে। এর বিরুদ্ধে সম্মিলিত ভাবে লড়তে হবে।’প্রসঙ্গত , ২০১২-এ প্রমোদতরী থেকে শাহরুখ পুত্র আরিয়ানকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সময় এনসিবির কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ফলে কেন্দ্রীয় স্বারষ্ট্রমন্ত্রীর এদিনের বক্তব্য বার্তাবহ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল।