১) কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে যাঁরা মুক্তি পেয়েছেন, তাঁদের প্রতি মাসে সোম এবং শুক্রবার থানায় হাজিরা দিতে হবে।
২) যদি এঁদের কারও কাছে পাসপোর্ট থাকে, তবে সেই পাসপোর্ট পুলিশের কাছে জমা রাখতে হবে।
৩) প্রত্যেকের মোবাইল নম্বর থানায় জমা দিতে হবে। মোবাইল তথ্যও থানায় জানাতে হবে।
৪) কোনও ভাবেই বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের রাজারহাট থানার অন্তর্ভুক্ত এলাকা ছাড়তে পারবেন না তাঁরা।
৫) অভিযুক্ত চার জন কোথাও যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে পুলিশকে জানাতে হবে। তাঁরা কোথায় যাচ্ছেন সেই তথ্যও পুলিশকে দিতে হবে। ফেরার পর থানায় রিপোর্ট করতে হবে ।
৬) নিজেদের বাড়ির ঠিকানা পুলিশকে জানাতে হবে। ঠিকানা বদল হলে পুলিশকে জানাতে হবে।
৭) অভিযুক্তরা কোনও ভাবেই কামদুনির নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না।
৯) একই ধরনের কোনও অপরাধ করবেন না
২০১৩ সালে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনির ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় পড়ে যায় । কলেজ থেকে ফেরার সময় কামদুনির এক তরুণীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। ক্ষোভে ফেটে পড়ে ওই এলাকা। পরে ওই মৃতার বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে দাঁড়িয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস ছিল, এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।
২০১৬-তে নিম্ন আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কামদুনি ধর্ষণ কাণ্ডের মূল দুই অভিযুক্ত আনসার আলি ও সইফুল আলির মৃত্যুদণ্ড হয়। এছাড়া আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ হয়। নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন সাজাপ্রাপ্তরা। ২০১৩ সালে কামদুনিতে কলেজছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ১০ বছর পর রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চ মূল অভিযুক্ত আনসার আলি ও সইফুল আলির মৃত্যুদণ্ড রদ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। আর আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথ মুক্তি পায়। এই রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার ও কামদুনি আন্দোলনের প্রতিবাদীরা। এই নির্দেশের জন্য রাজ্য সরকারের ভূমিকাকে দায়ী করা হয়।
এরপরই রাজ্য সরকারের তরফে কামদুনি রায়ের বিরোধিতায় শীর্ষ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল হয়। মামলা করেন কামদুনির প্রতিবাদীরাও। এদিন সেই আবেদনের ভিত্তিতেই অন্তবর্তীকালীন নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারীরা আদালতে জানান যে, এই মামলার পুনর্তদন্তের দাবি ওঠায় অভিযুক্তদের ছাড়া হলে এই মামলার অন্যান্য তথ্য প্রমাণ লোপাট হতে পারে। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। তবে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশের উপর কোনও স্থগিতাদেশ এদিন দেয়নি। কিন্তু চারজনের মুক্তির ওপর একাধিক শর্ত আরোপ করেছে।