‘নেই বিরোধী’ দেশে তেতাল্লিশ বছর ধরে একই প্রেসিডেন্ট

মালাবো, ২৮ নভেম্বর– খাতায়কলমে গণতান্ত্রিক দেশ, কিন্তু নেই বিরোধী দল কিংবা স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের প্রায় কোনও অস্তিত্ব। নির্বাচন হলেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একটি দলই শাসনক্ষমতায় আসে। প্রেসিডেন্ট হন এক জনই।

আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত ইকুয়েটরিয়াল গিনির এটাই ছবি ।১৯৬৮ সাল পর্যন্ত দেশটি ফরাসি উপনিবেশ ছিল। তারপর দেশটিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু সে দেশ এখনও পর্যন্ত বিরোধীদের শাসকের আসনে বসতে দেখেনি।

কিছু দিন আগেই সে দেশের সাধারণ নির্বাচনে ‘অসাধারণ’ সাফল্য পেয়েছে শাসকদল। ৪৩ বছর ধরে দেশশাসন করার পর আবার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন অশীতিপর টেওডোরো ওবিয়াং এনগুয়েমা এমবাসোগো। নির্বাচনের ফলাফল বলছে মোট বৈধ ভোটের পঁচানব্বই শতাংশ গিয়েছে তাঁর পক্ষে। আর ইতিহাস বলছে, এত দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্বের কোনও রাষ্ট্রপ্রধান ক্ষমতায় থাকেননি।

১৯৭৬ সালে ফরাসিরা গিনি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হন ফ্রান্সিসকো ম্যাসিয়াস এনগুয়েমা। তাঁরই উত্তরসূরি হিসাবে ১৯৭৯ সালে মসনদে বসেন ভাইপো ওবিয়াং এনগুয়েমা। মানবাধিকার সংগঠনগুলির অভিযোগ, দেশে কোনও গণতন্ত্র নেই। নেই কোনও বিরোধী দলও। বিরোধীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেন না। দেশের সব ক’টি সংবাদমাধ্যমই নাকি সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাই বিরোধীদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠলেও সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে সে কথা উঠে আসে না। তবে থাকার মধ্যে আছে দু’টি। এক, সেনার অতিসক্রিয়তা এবং দুই, তেলের অফুরন্ত ভান্ডার। বেশ কয়েকটি সেনা অভ্যুত্থানকে দমন করেই গদি টিকিয়ে রেখেছেন এনগুয়েমা। আর ১৯৯৬ সালে আবিষ্কৃত হওয়া অফুরন্ত তেলের ভান্ডারও আর্থ-সামাজিক মানদণ্ডে পিছিয়ে রেখেছে এই দেশটিকে। এখনও সে দেশে রয়েছে অনাহার, দারিদ্র।