নতুন সংসদ ভবনের নাম হওয়া উচিত ‘মোদি মাল্টিপ্লেক্স’, কটাক্ষ জয়রামের 

দিল্লি, ২৩ সেপ্টেম্বর –  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে কটাক্ষ করলেন প্রবীণ কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী  জয়রাম রমেশ। তাঁর মতে, নতুন সংসদ ভবনের নাম হওয়া উচিত ‘মোদি মাল্টিপ্লেক্স’ বা ‘মোদি ম্যারিয়ট’। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশ এক্স হ্যান্ডেলে নয়া সংসদ ভবনের সঙ্গে তুলনা টেনেছেন পুরনো সংসদ ভবনের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে এদিন তিনি বলেন ২০২৪ সালের কেন্দ্রীয় সরকারে পরিবর্তন আসবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হাসি মুখেই সমস্ত সাংসদরা নতুন সংসদ ভবনে গেলেও, অধিবেশন শেষ হতেই বেসুরো কংগ্রেস।
পাঁচদিন ব্যাপী সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছিল ১৮ সেপ্টেম্বর , শেষ হয় ২২ সেপ্টেম্বর। নতুন সংসদ ভবনের পথ চলা শুরু হয় ১৯ সেপ্টেম্বর। শনিবার সকালে জয়রাম রমেশ লেখেন, “নতুন সংসদ ভবনের সূচনা হয়েছে বর্ণময় আয়োজনের মধ্যে দিয়ে। এই ভবনের সূচনার মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যগুলো সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। একে ‘মোদি মাল্টিপ্লেক্স’ বা ‘মোদি ম্যারিয়ট’ নাম ডাকাই শ্রেয়। চার দিন পর আমার যা উপলব্ধি তা হল দুই কক্ষের ভিতরে সঠিক ভাবে মত বিনিময় করা যায় না। যদি স্থাপত্য গণতন্ত্রকে হত্যা করতে পারে, তবে প্রধানমন্ত্রী সংবিধান পুনর্লিখন না করেও ইতিমধ্যে সফল হয়েছেন।” তাঁর মতে ‘সংসদের দুই কক্ষ ও লবিগুলিতে আলোচনা হও কথোপথন দুটোরই সলিল সমাধি হয়েছে।’      
 
নতুন সংসদ ভবনের নির্মাণশৈলীরও সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তিনি বলেন, ‘নতুন সংসদ ভবনের হলগুলির আয়তন একেবারেই আরামদায়ক নয়, একে অপরকে দেখলে হলে দূরবীন লাগবে।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘পুরনো সংসদ ভবনে যে শুধু একটা বিশেষ আবহ ছিল তাই নয়, সুবিধে হত আলাপচারিতাতেও। দুই কক্ষের মধ্যে যাতায়াত, সেন্ট্রাল হল ও করিডরের মধ্যে হাঁটাচলা  করা যেত সহজেই। একটি অধিবেশন সফলভাবে চালাতে দুই কক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজন। সেই দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে নতুন সংসদ ভবন।’
জয়রাম রমেশের কথায়, ‘পুরনো সংসদ ভবনটি গোলাকার। সেখানে কেউ পথ হারিয়ে ফেললেও ফিরে আসতে পারবে। আর নতুন সংসদ ভবনের রাস্তা হারিয়ে ফেললে একেবারে ধাঁধা লেগে যাবে।’ তাঁর আরও দাবি, ‘পুরনো সংসদ ভবনে খোলামেলা পরিবেশ ছিল। নতুন সংসদ ভবনে দমবন্ধ পরিবেশ। সংসদে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ হারিয়ে গেছে বলে কি ধরণের নকশা হলে কাজের ক্ষেত্রে সুবিধে হবে সেই সম্পর্কেও কারো মতামত নেওয়া হয়নি। কাজের ক্ষেত্রে সুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হয়নি সংসদ ভবন নির্মাণের সময়। আমি একথা খোদ সচিবালয়ের কর্মীদের কাছ থেকেও শুনেছি।’ তিনি লেখেন, তাঁর কাছে নতুন সংসদ ভবনে সময় কাটানো যন্ত্রণাদায়ক। এই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে অন্য অনেক নেতারাও সহমত হবেন বলে মনে করেন প্রবীণ কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ। সুদীর্ঘ পোস্টের শেষে জয়রাম রমেশের ক্ষোভ ও আশা দুই ফুটে উঠেছে। শেষের দিকে তিনি লেখেন, ‘২০২৪ সালের মধ্যে হয়তো নতুন সংসদ ভবনের সদ্ব্যবহার হতে  পারে।’