কলকাতা , ২৮ জুন – হাতেনাতে জালিয়াতি ধরলেন হাইকোর্টের বিচারপতি। এজলাসে বসে নিজের ফোনে কিউআর কোড স্ক্যান করে এক জয়েন্ট পরীক্ষার্থীর জালিয়াতি ধরে ফেললেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। গত মাসের ২৬ তারিখ প্রকাশিত হয় রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলাফল। সেই ফলাফল দেখার পর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এক পরীক্ষার্থী । তাঁর অভিযোগ ছিল, যখন তিনি প্রথমে ওয়েবসাইটে নিজের র্যাঙ্ক দেখেন সেই সময় তাঁর জেনারেল মেরিট র্যাঙ্ক ছিল ১৬ এবং ফার্মাসি মেরিট র্যাঙ্ক ছিল ২৪১। কিন্তু দ্বিতীয়বার উত্তরপত্রের স্ক্যান করতেই বিপত্তি ঘটে। তাঁর র্যাঙ্ক বদলে যায়। ওই পরীক্ষার্থীর দাবি ছিল, দ্বিতীয়বার স্ক্যান করে মেরিট লিস্টে তিনি দেখতে পান তাঁর জেনারেল মেরিট র্যাঙ্ক ১৪৩৯ ও ফার্মাসি মেরিট র্যাঙ্ক ৩২৮৫। কেন দু’বার দু’রকম র্যাঙ্ক এল সেই নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন ওই পরীক্ষার্থী ।
বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি পরীক্ষার্থীর অভিযোগ খুবই গুরুত্বের সঙ্গে শোনেন। এমনকী এই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া যায় কিনা সেই নিয়ে আলোচনা করেন।
সেই সময় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের আইনজীবী পাল্টা আদালতকে জানান, পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্রে থাকা কিউ আর কোড স্ক্যান করে তাঁর র্যাঙ্ক দেখতে। কারণ উত্তরপত্রে পরীক্ষার্থীর হস্তাক্ষর রয়েছে। সেটি নকল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তারপরই বিচারপতি এই ধন্দ কাটাতে নিজের ফোনে উত্তরপত্রের কিউআর কোড স্ক্যান করেন। এমনকী আইনজীবীর ফোনেও স্ক্যান করান। তখন দেখা যায়, দ্বিতীয়বার যে রেজাল্ট আসে সেটিই সঠিক।
এরপরই বিচারপতি পরীক্ষার্থীকে জেরা শুরু করেন। বিচারপতি চন্দের প্রশ্নের মুখে ভেঙে পড়েন ওই পরীক্ষার্থী। অবশেষে তিনি স্বীকার করে নেন যে তিনি র্যাঙ্ক সংক্রান্ত নথি জালিয়াতি করেছেন এবং আদালতে মিথ্যা নালিশ করেছেন। যা শুনে মামলাটি খারিজ করে দেন বিচারপতি চন্দ। তবে মামলা খারিজ করলেও ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হয়নি। যে হেতু সে ছাত্র, তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও রকম বিরূপ পদক্ষেপ না করতে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে অনুরোধ করেছেন বিচারপতি।
চলতি বছর জয়েন্ট পরীক্ষা হয় ৩০ এপ্রিল। চলতি বছরে ২৬ দিনের মাথায় প্রকাশিত হয় জয়েন্টের ফলাফল। এই বছর মোট এক লাখ ২৪ হাজার ৯১৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেন।