শরীরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সংক্রমণ ,কার্যত বিফল অ্যান্টিবায়োটিক

কলকাতা ,২৭ জানুয়ারী — জাকিয়ে কিছুদিনের শীতের পর হটাৎ করে গরম পড়ায় ঘরে ঘরে সর্দি কাশির মরশুম। আবহাওয়া পরিবর্তনে বেশিরভাগটাই সাধারণ ঠান্ডা লাগা, আর কিছু হয় ভাইরাল সংক্রমণের কারণে। আর এই কারণেই বেশিরভাগ মানুষ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক  কিনে খান।এইভাবে সামান্য রোগ ব্যাধিতে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়ায় মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায় । যখন তখন ওষুধ খাওয়ার ভয়ঙ্কর পরিণতি এখনই টের পাওয়া যাচ্ছে।

সূত্রের খবর, বাংলায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, কোনওরকম অ্য়ান্টিবায়োটিকই আর কাজ করছে না তাদের শরীরে। রাজ্যের ২৩টি হাসপাতালে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলছেন, যখন তখন মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার অভ্যাসের কারণেই এই দুর্দশা হয়েছে।  ডাক্তারকে জিজ্ঞেস না করে নিজেই ডাক্তারি করতে ভালবাসেন বেশিরভাগই। এর ফলই দেখা যাচ্ছে এখন। ওষুধে আর কাজ হচ্ছে না,  ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়াদের সংখ্যা বাড়ছে।

জানা গেছে, শরীরের সাধারণ প্রতিরোধ ক্ষমতাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে অল্পেই যে রোগ সারে তাও দুরারোগ্য হয়ে উঠছে। সরকারি হাসপাতালের আউটডোরের ৯২ শতাংশ রোগীদের ক্ষেত্রেই আর কাজ দিচ্ছে অ্যাজিথ্রোমাইসিন। ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে কাজ করছে না সেফিক্সিম। ওফ্লক্সাসিনের মতো ওষুধেও কমছে না সংক্রমণ। অ্যান্টিবায়োটিক অ্যামক্সিসিলিন-ক্লাভুলেনিক অ্যাসিড কাজেই আসছে না অন্তত ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে। অক্টোবর মাস থেকে ২৩টি মেডিক্যাল কলেজের আউটডোর, ‌ওয়ার্ড, আইসিইউ ও ভেন্টিলেশনের রোগীদের বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। ৬,৫৩৬টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়ে স্বাস্থ্যভবনে। তাতেই এই ভয়ঙ্কর ছবি সামনে এসেছে।


স্বাস্থ্যদফতর জানাচ্ছে, ই কোলাই, স্ট্যাফাইলোক্কাস, অ্যাসিনেটোব্যাকটর ও সিউডোমোনাসের মতো ব্যাকটেরিয়া আর ওষুধে মরছে না। কার্যত মানুষের শরীরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এইসব ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট হয়ে গেছে।