বাসন্তীর নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন রাজ্যপাল

বাসন্তী , ৬ মে  – বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় একইসঙ্গে মৃত্যু হয়েছে তিন ভাইয়ের। তিন সন্তানকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ মা সুভদ্রা গায়েন। মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ছড়ানেখালি গ্রামে গিয়ে শোকস্তব্ধ ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ওই গ্রামেরই আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে সেদিনের ট্রেন দুর্ঘটনায়। তাঁদের বাড়িতে গিয়েও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্রেন দুর্ঘটনায় তিন ছেলেকেই হারিয়েছেন বাসন্তীর ছড়ানেখালির গায়েন পরিবারের সুভদ্রা গায়েন। তিন ভাই হারান, নিশিকান্ত এবং দিবাকর শুক্রবার করমণ্ডল এক্সপ্রেসে  রওনা হয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের উদ্দেশে । সেখানে ধান চাষের কাজ করার জন্য যাচ্ছিলেন তাঁরা। এর আগেও কয়েক বার অন্ধ্রপ্রদেশে গেছেন তাঁরা। কিন্তু আর কাজে যোগ দেওয়া হল না তাঁদের। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ছড়ানেখালির ওই তিন ভাইয়েরই।শোকে পাথর নিহত তিন ভাই হারান গায়েন, নিশিকান্ত গায়েন এবং দিবাকর গায়েনের মায়ের পাশে গিয়ে দাঁড়ান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তাঁকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিন সন্তান হারানো মা সুভদ্রা।  পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকার বার্তা দেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এই দুঃখজনক পরিস্থিতিতে পরিবারটিকে কী ভাবে সাহায্য করা যায়, তা দেখব।’ 
সূত্রের খবর, স্বজনহারা পরিবারগুলি পাশে দাঁড়াতে আপাতত ৬ মাস তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ হাজার টাকা করে দেবেন রাজ্যপাল। পারলৌকিক কাজের জন্য এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি । এদিন রাজ্যপাল ফল, জামাকাপড়-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে আসেন। বাসন্তীর বিডিওর মাধ্যমে সেসব তাঁদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে। যাঁদের ‘জনধন’ অ্যাকাউন্ট আছে তাঁদের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন রাজ্যপাল।
করমণ্ডল দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে ছড়ানেখালির বাসিন্দা সঞ্জয় হালদার এবং বিকাশ হালদারেরও। তাঁদের পরিবারের সঙ্গেও গিয়ে দেখা করেন রাজ্যপাল। কথা বলেন তাদের পরিবারের সঙ্গে। 
মঙ্গলবার স্থানীয় মানুষজন রাজ্যপালকে কাছে পেয়ে বেশ কিছু অভাব অভিযোগের কথা তুলে ধরেন। এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা, নদীতে বাঁধের সমস্যা সবটাই শোনেন রাজ্যপাল। বিডিওকে ডেকে রাজ্যপাল সমস্ত সমস্যা যাতে খতিয়ে দেখা হয় তার নির্দেশ দেন। গ্রামে কাজ না থাকায় বেশিরভাগ মানুষই অন্য রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। গ্রামের বেকার যুবকেরা রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ করেছেন এলাকায় কোন কাজ নেই. তাঁদের অভাব অভিযোগ শোনেন রাজ্যপাল।  সমস্যার সুরাহা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।