• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

এখনও অনিশ্চিত উত্তরকাশীর টানেল বন্দি ৪১ জন শ্রমিকের মুক্ত জীবন 

উত্তরকাশী, ২২ নভেম্বর –  বুধবার ১১ দিনে পড়ল উত্তরকাশীর সিল্কইয়ারা টানেলে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিকের রুদ্ধশ্বাস, বন্দী জীবন। এখনও শ্রমিকদের উদ্ধারে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। কোনও শ্রমিককে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। দেশ-বিদেশের টানেল বিশেষজ্ঞদেড় ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়েছে, উদ্যোগী হয়েছে এন্ড্রো ও রাজ্য প্রশাসন। সেদিকে  কিছুটা আসার এল দেখিয়েছেন এনডিআরএফ -এর

উত্তরকাশী, ২২ নভেম্বর –  বুধবার ১১ দিনে পড়ল উত্তরকাশীর সিল্কইয়ারা টানেলে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিকের রুদ্ধশ্বাস, বন্দী জীবন। এখনও শ্রমিকদের উদ্ধারে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। কোনও শ্রমিককে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। দেশ-বিদেশের টানেল বিশেষজ্ঞদেড় ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়েছে, উদ্যোগী হয়েছে এন্ড্রো ও রাজ্য প্রশাসন। সেদিকে  কিছুটা আসার এল দেখিয়েছেন এনডিআরএফ -এর সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড রবি এস বাধানি।  তিনি বলেন, উদ্ধারকাজ ঠিকঠাকভাবে এগোচ্ছে। আটকে থাকা শ্রমিকদের খুব কাছাকাছি আমরা রয়েছি। তবে ঠিক কবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। এই কাজে সময় লাগবে। তবে কেন্দ্রের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, পরিকল্পনা মতো কাজ এগোলে, খননযন্ত্রের সাহায্যে আগামী দু’দিনে আটকে পড়া সকলকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা যদি সফল না হয় তবে উদ্ধারকাজে  ১৫ দিন সময় লেগে যেতে পারে।এদিকে  বুধবার সকালে  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি  উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামীকে ফোন করে  শেষ ২৪ ঘণ্টার উদ্ধারকাজ সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।  

কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের সচিব অনুরাগ জৈন জানিয়েছেন, আমেরিকার খননযন্ত্র অগারের মাধ্যমেই শ্রমিকদের দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে তিন দিনের মধ্যেই ৪১ জনকে উদ্ধার করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি অনুরাগ জানান, উদ্ধারকাজের জন্য আরও পাঁচটি আলাদা পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ওই ৪১ জনকে নিরাপদে বাইরে বার করে আনতে ১২ থেকে ১৫ দিন সময় লেগে যেতে পারে।

তবে উদ্ধারকারী দলের তরফে জানানো হয়েছে, উদ্ধারকাজ অনেকটাই এগিয়েছে। এখন আটকে থাকা ৪১ শ্রমিক ও উদ্ধারকারী দলের মাঝে কেবল ৪০ মিটারের পুরু ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। এই ধ্বংসাবশেষ ড্রিল করতে পারলেই উদ্ধার করা সম্ভব হবে শ্রমিকদের। কিন্তু এক্ষেত্রে হিমালয় অঞ্চলের মাটির প্রকৃতি থেকে শুরু করে টপোগ্রাফি একাধিক ভৌগোলিক বিষয় রয়েছে, যা উদ্ধারকাজকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে । সেই কারণে অতি সাবধানতা অবলম্বন করে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে।

টানেলে আটকে থাকা শ্রমিকদের খিচুড়ির পর মঙ্গলবার রাতের খাবারে পোলাও, মটর পনির এবং দু’টি করে রুটি দেওয়া হয় । শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে হালকা খাবার দেওয়া হচ্ছে । মঙ্গলবার রাতে পাইপের ভিতর দিয়ে প্রায় দেড়শোটি খাবারের প্যাকেট শ্রমিকদের কাছে পাঠানো হয়।

সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ৬ ইঞ্চির খাবার সরবরাহকারী একটি পাইপের মাধ্যমে টানেলের ভিতরে খাবারের প্যাকেট করা  ফলও দেওয়া হয় । সঞ্জিত রানা নামে এক রাঁধুনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই সমস্ত রান্না করেছি। হজম করতে অসুবিধা হবে না এমন খাবারই রান্নার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কম তেলমশলা দিয়ে ভেজ পোলাও এবং মটর পনির রান্না করেছি। মাখন দিয়ে রুটিও বানিয়েছি।’’

উদ্ধারকারী দলের তরফে আটকে থাকা শ্রমিকদের আশ্বস্ত করে বলা হয়, তাদের শীঘ্রই উদ্ধার করা হবে। এরপর প্রত্যেকের আত্মীয়দের সবাইকে  ক্যামেরার সামনে আসতে বলা হয়। তাঁরা ওয়াকি-টকি পেয়েছেন কি না তাও জানাতে বলা হয়। শ্রমিকরা সম্মতি জানালে কীভাবে সেই ওয়াকি-টকি ব্যবহার করতে হয়, তা বলে দেন উদ্ধারকারী দলের একজন। এরপরে আটকে থাকা শ্রমিকদের জন্য বোতলে গরম খিচুড়ি ও ডালিয়া পাঠানো হয়। বিগত ১০-১১ দিনে এটাই ছিল তাদের প্রথম গরম খাবার।

জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল সায়েদ এটা হাসনায়েন জানিয়েছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী, একটি ৯০০ মিলিমিটার পাইপ ঢোকানো হবে ধ্বংসস্তূপে। আড়াআড়িভাবে ড্রিল করা হবে গুহায়। সেখান থেকেই শ্রমিকদের জন্য এসকেপি ৰূট তৈরী করে উদ্ধার করা  হবে। তবে সড়ক ও পরিবণের টেকনিক্যাল বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবার জানিয়েছেন, ৯০০ নয় ৮০০ মিলিমিটার ড্রিল করা হবে উদ্ধারকাজের স্বার্থে। সূত্র মারফত এও খবর পাওয়া যাচ্ছে, এই বিপর্যস্ত টানেলের পিছন থেকে অপর একটি সুড়ঙ্গ খোদাই করে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হতে পারে।