দূষণ রোধে দীপাবলিতে বাজি পোড়ানো সম্পূৰ্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে চলেছে দিল্লি প্রশাসন

দিল্লি, ২৬ অক্টোবর –  দূষণ ঠেকাতে দীপাবলিতে বাজি পোড়ানো সম্পূৰ্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে চলেছে দিল্লি প্রশাসন। বুধবার তেমনই ইঙ্গিত দেন দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই। সামনেই  দীপাবলি। আলোর এই উৎসবে একটি বাজিও পোড়ানো যাবে না দিল্লিতে। বায়ুদূষণ রোধ করতে কড়া সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে প্রশাসন। একইসঙ্গে অবৈধ নির্মাণ রুখতে বিশেষ নজরদারি টিম তৈরি করছে সরকার। তবুও পরিস্থিতি যেহেতু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, তাই কড়া পদক্ষেপ কতটা কাজে আসবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ বায়ুদূষণের মাপকাঠিতে দেশের মধ্যে সবথেকে খারাপ পরিস্থিতি দিল্লির। দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ইতিমধ্যেই ৩০০ ছাড়িয়েছে। এর মাত্রা অস্বাভাবিক বেশি থাকায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরাও।

কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার ভোরে দিল্লির বাতাসে একিউআই-র পরিমাণ ছিল ২৫৬। মঙ্গলবার সূচক ছিল ২৪৩। তিন দিনের মধ্যেই একিউআই ৩০০ পেরিয়ে যাওয়ায় কয়েকদিনের মধ্য়েই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করা হয়েছে। দিল্লির পাশাপাশি বায়ুদূষণের মাত্রা অনেকটাই বেশি রয়েছে নয়ডা, গাজিয়াবাদ-সহ উত্তর প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়েক দিনের মধ্যে জাঁকিয়ে শীত পড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেবে। ভোরের দিকে কুয়াশা থাকলে একিউআইয়ের পরিমাণ বাড়তে পারে। পরিস্থিতি সামলাতে হাজারের বেশি আধিকারিক নিয়ে টিম তৈরি করেছে দিল্লি পুরসভা। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সামগ্রী সরবরাহের সময় যে ধূলো ওড়ে, তা বন্ধ করতে তাঁদের নির্দেশে দেওয়া হয়েছে।
এর আগেই দশেরাতে মহা ধুমধাম করে দিল্লিতে রাবণ দহনের অনুষ্ঠান পালন করা হয়। সেখানে কম ক্ষতিকর বাজি ব্যবহার করা হয়েছে বলে সাফাই দেন দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই।
দিল্লির সরকারের দাবি, পাঞ্জাব-হরিয়ানায় কৃষকরা ফসলের গোড়া পুড়িয়ে দেওয়ার কারণেই মাত্রাতিরিক্ত এই বায়ুদূষণ তৈরি হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে উড়ে আসছে বিষাক্ত ধোঁয়া। মিশছে রাজধানীর বাতাসে। বৃহস্পতিবার প্রশাসনের তরফে মোট ১৩টি হটস্পট এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে বায়ু দূষণের পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। গত কয়েক বছরে লাগাতার প্রশাসনিক প্রচারের ফলে এই ফসলের গোড়া পোড়ানোর পরিমাণ কমেছে। সরকারি তথ্য় অনুযায়ী, এবছর ২৫ হাজার ফসলের গোড়া পোড়ানো হয়েছে। এর আগে এই সংখ্যা ৩০ থেকে ৫০ হাজার ছিল বলে সরকারি সূত্রে খবর ।