কলকাতা, ২২ জুন – পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করায় তিরস্কৃত হয়েছেন বর্তমান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। কিন্তু এর সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা ঘটেছিল ২০১৩ সালে। রাজ্যের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্ট, তারপর সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের অনুমতি নিয়ে এসেছিলেন মীরা পাণ্ডে। স্বভাবতই সঙ্কটজনক এই পরিস্থিতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন মীরা পান্ডে। প্রাক্তন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা প্রয়োজন কিনা, কোথায় কতটা প্রয়োজন, তা নির্বাচন কমিশনই খতিয়ে দেখে এবং রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার পর কমিশনই জানায় কত কোম্পানি বাহিনী প্রয়োজন। পাশাপাশি তিনি এও জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা হারানো দুর্ভাগ্যজনক। প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডে বলেন, ”নির্বাচন কমিশনকে তিরস্কার কাম্য নয়। এতে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। কমিশনার না থাকলে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াই বাধা প্রাপ্ত হতে পারে। সংবিধান অনুযায়ী ভোট পরিচালনার ক্ষমতা ও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে।”
যে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার নিয়ে গন্ডগোলের সূত্রপাত, কমিশন ভোটে তার ব্যবহার কতটা জরুরি এপ্রসঙ্গে বাংলার প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার জানান, ”সুষ্ঠু ভোট পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী দরকার। কারণ পর্যাপ্ত বাহিনী রাজ্যের কাছে থাকে না। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী হলে এক জায়গা থেকেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী মেলে। সাধারণ মানুষেরও আস্থা বাড়ে। কিন্তু কতটা বাহিনী প্রয়োজন তা কমিশনকে বুথ অনুযায়ী খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মীরা। সেই সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। আদালতে মীরার জয় হয়। মীরার কথায়, ‘‘এই যে ঘটনাগুলি ঘটছে, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক . অল্পবিস্তর গোলমাল সব সময়েই হয়। কখনও বেশি, কখনও কম। এর মধ্যে দিয়েই আমাদের পশ্চিমবঙ্গে ভোট হয়ে আসছে। তাই আস্থা হারানো আমি মনে করি দুর্ভাগ্যজনক।’’
পক্ষপাতদুষ্টতা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে মীরা বলেন, ‘‘প্রতিটা ভোটেই অভিযোগ ওঠে। তার নিষ্পত্তিও হয়। সব কিছুর একটা পদ্ধতি আছে। কমিশনকেও সেই সময় দিতে হবে। যাতে কমিশনার অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে পারেন। কোথায় কত বাহিনী মোতায়েন করতে হবে, সেটা কমিশনকেই ঠিক করতে হবে। এটা কমিশনেরই এক্তিয়ার।’’
এদিকে বৃহস্পতিবার আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রথমে চাওয়া হয়েছিল ২২ কোম্পানি, এবার আরও ৮০০ কোম্পানি যোগ হয়ে দাঁড়াল ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।