কলকাতা, ১১ জুন – গ্রামবাংলার ভোটযুদ্ধে কৌশল বদলাচ্ছে বিজেপি শিবির। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব নয়, গ্রামবাংলার ভোটে লড়বেন রাজ্য নেতারাই। আপাতত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলায় আসার কোনও সম্ভাবনাও নেই। বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাগণ, রাজ্যের নেতা বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে অংশ নেবেন না। মোদি সরকারের ন’বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলায় যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল, তা-ও জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থগিত রাখা হবে। আপাতত পঞ্চায়েত ভোটকেই লক্ষ্য় করে এগোচ্ছে গেরুয়া শিবির ।
মে মাসে মোদি সরকারের নয় বছর পূর্তি হয়েছে। মোদি সরকারের সাফল্য় তুলে ধরতে গোটা দেশে প্রচার কর্মসূচি নেয় বিজেপি। এই রাজ্য়েও জুন , জুলাই ও অগস্টে সভা করার কথা ছিল। কোথায় কোন নেতা যাবেন তা-ও স্থির হয়ে যায়। সেইমতো কর্মসূচিও শুরু হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় আপাতত তা স্থগিত রয়েছে। ভোটের পরে এই কর্মসূচি আবার শুরু করা হবে কি না, তা পরে পরিস্থিতি বুঝে ঠিক করা হবে জানা গেছে।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পঞ্চায়েত নির্বাচন মূলত রাজ্য নেতৃত্বের উপর নির্ভরশীল । গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাী ক্ষেত্রেও ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকেই তাঁদের নজর। সাংগঠনিক বৈঠকে সে কথা তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছেন। রাজ্য নেতারা নিজেদের জেলায় এই সময়ে বেশি করে সময় দেবেন, নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাংসদ, বিধায়কদেরও। তবে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিজের জেলা ছাড়াও বাইরে প্রচারে যাবেন।
সাফল্যের প্রচারে জুন মাসে মোদি, অমিত শাহ এবং নাড্ডার উপস্থিতিতে রাজ্যে তিনটি সভা হবে বলে ঠিক থাকলেও আপাতত তা বাতিল করা হয়েছে। কারণ, তিনটি সভাই হওয়ার কথা ছিল শহরে । গ্রামবাংলার ভোটের সময় শহরে প্রচার কর্মসূচী কাজে আসবে না বলেই মনে করছে বিজেপি নেতৃত্ব। দ্বিতীয়ত, রাজ্য নেতাদের এখন দায়িত্ব পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা ও প্রচার করা, ফলে অন্য কাজে সময় ব্য়য় করা যাবে না।
তবে পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্পন্ন হলে পুজোর আগেই আবার প্রচার অভিযান শুরু হবে। আপাতত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারেই জোর দেওয়া হবে। ‘মহা জনসম্পর্ক’ কর্মসূচির যে সভাগুলি গ্রামাঞ্চলে হওয়ার কথা ছিল সেগুলি হবে। তবে বেশি বড় সভা করার পরিকল্পনা নেই বিজেপির। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘ গ্রামে ভোটের সময়ে আমাদের পঞ্চায়েত এলাকায় সময় বেশি দিতে হবে। এই সময়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার যে কর্মসূচি ছিল তা তো হবেই।’’ তিনি আরও বলেন, দেশে যা যা হয়েছে তার থেকে বাংলা বাদ নয়। তবে কিছু কিছু প্রকল্পের সুবিধা বাংলার মানুষ পাননি। গ্রামের মানুষের জন্য বিজেপি সরকার কী কী করেছে তা যেমন তুলে ধরা হবে , তেমনই রাজ্য সরকারের প্রশ্রয়ে তৃণমূলের দুর্নীতি, বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করা, সে সব কথাও মানুষকে বোঝানো হবে।