• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল আততায়ী

শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণে তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য ওঠে এল শ্রীলঙ্কা পুলিশের হাতে। বোমা বিস্ফোরণের ঠিক আগেই কলম্বো গ্র্যান্ড হোটেলের খাবারের লাইনে দাঁড়িয়েছিল আততায়ী।

শ্রীলঙ্কার নিরাপত্তা বাহিনী গির্জার প্রাঙ্গণের বাইরে নজর রাখছে (Photo: Xinhua/A.Hapuarachchi/IANS)

শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণে তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য ওঠে এল শ্রীলঙ্কা পুলিশের হাতে। বোমা বিস্ফোরণের ঠিক আগেই কলম্বো গ্র্যান্ড হোটেলের খাবারের লাইনে দাঁড়িয়েছিল আততায়ী। তাঁর পাতে খাবার দেওয়ার সময়ই বিস্ফোরণ ঘটায় মহম্মদ আজম। হোটেলে সেই সময় বহু মানুষ মজুত ছিলেন। মুহূর্তে তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়। আতঙ্কে পালাতে গিয়ে অনেকে আহত হন।

হোটেলের ম্যানেজার পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘লাইনে দাঁড়িয়ে খাবারের কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছে যান আজম। তারপরই বিস্ফোরণটি হয়। খাবার পরিবেশন করছিলেন যে কৰ্মী সেই মুহূর্তে তার মৃত্যু হয়।’

প্রায় একই সময় শহরের আর ২-৩টি হোটেল এবং গির্জায় বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের জেরে কেঁপে ওঠে গির্জাগুলি। প্রার্থনার সময় অনেক মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সময় যত এগিয়েছে মৃতের সংখ্যা ততই বেড়েছে।

বিস্ফোরণের মধ্যেই রাজধানীর প্রধান বিমানবন্দরের খুব কাছেই উদ্ধার হয় পাইপ বোমা। তবে নতুন করে ভয়াবহ ঘটনা ঘটার আগেই সেটি নিষ্ক্রিয় করে দেয় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছে স্থানীয় পদ্ধতিতে বোমাটি তৈরি করা হয়েছে। বিমানবন্দরে টার্মিনালে সেটি পড়েছিল। বোমাটি পাওয়ার সঙ্গেই সেটি নিষ্ক্রিয় করে দেয় পলিশ। শ্রীলঙ্কার বায়ুসেনার এক অফিসার জানিয়েছেন আইইডি বোমাটি শ্রীলঙ্কাতেই তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করছেন।

শ্রীলঙ্কার গির্জায় যে হামলা হতে পারে তার ইঙ্গিত আগেই ছিল শ্রীলঙ্কা পুলিশের কাছে। সতর্কবার্তা জারি করেছিলেন পুলিশ প্রধান। পি জয়াসুন্দরা জানিয়েছেন, ‘১১ এপ্রিল পুলিশ অফিসারদের কাছে সতর্কবার্তা পাঠান হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, শ্রীলঙ্কার ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এনটিজে) নামে একটি সংগঠন দেশের প্রসিদ্ধ গির্জাগুলিতে হামলার চেষ্টা করছে। ভারতীয় হাই কমিশনও তাদের নজরে আছে বলে সতর্ক করা হয়েছিল।

গোটা দেশে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। আজ রাত থেকে জরুরি অবস্থা জারি করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এনটিজে জঙ্গি সংগঠন এর পিছনে রয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০ কাছাকাছি। সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮ টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৪ টে পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন সরকারের মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে।

এখন পর্যন্ত সন্দেহের বশে ২৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সরকারের তরফ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বিছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর পিছনে বিদেশি শক্তির মদত রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃতের মধ্যে ৩৫ জন বিদেশি ছিলেন। যে ৬ জন মারা গিয়েছেন তাদের মধ্যে ২ জন জেডি (এস) সদস্য ছিলেন। ব্রিটেন নেদারল্যান্ডস, চিন, আমেরিকার বাসিন্দারাও ছিলেন। শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে বিবৃতি দিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে কোনও রকম সন্দেহজনক ঘটনা ঘটলেই তড়িঘড়ি প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।