দিল্লি, ১৩ অক্টোবর – সন্ত্রাসবাদকে মানবতার শত্রু বলে উল্লেখ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত শনিবার ইজরায়েলে আচমকা হামলা চালায় প্য়ালেস্টাইনপন্থী হামাস গোষ্ঠী। তার পর থেকে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে চর্চা চলছে গোটা বিশ্ব জুড়ে। এই পরিস্থিতিতে এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে একটাই স্বর থাকবে।’ শুক্রবার দিল্লিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদের অধ্যক্ষদের পি-২০ সম্মেলন হচ্ছে। এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোদি ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বলেন।
শুক্রবার দিল্লিতে যশোভূমি কনভেনশন সেন্টারে জি-২০ গোষ্ঠীর সদস্য দেশগুলির সংসদের অধ্যক্ষরা পি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন। তবে, জি২০ গোষ্ঠী এখন আর ২০ সদস্যের নয়, আফ্রিকান ইউনিয়নও এই গোষ্ঠীর নতুন সদস্য । এদিনের শীর্ষ সম্মেলনে প্রথমবার যোগ দিয়েছেন আফ্রিকান ইউনিয়নের সংসদের অধ্যক্ষও। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়েই সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা নিয়ে ঐকমত্য হয়নি, এটা দুঃখজনক। মানবতার শত্রুরা এর সুবিধা নিচ্ছে। গোটা বিশ্বের সমস্ত দেশের সংসদগুলিকে ভাবতে হবে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা যাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারি।”
২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ভারতীয় সংসদে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানের মদতপুষ্ট দুই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী, লস্কর-ই-তৈবা এবং জইশ-ই-মহম্মদ। এই হামলায় দিল্লী পুলিশের ছয় কর্মী, পার্লামেন্ট সিকিউরিটি সার্ভিসের দুই কর্মী এবং এক মালীর মৃত্যু হয়। সংসদের বাইরে ওই পাঁচ জঙ্গিকে খতম করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। এদিন, সেই হামলার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “সন্ত্রাসবাদীরা জানত আমাদের সংসদ চলছে। তারা এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে খতম করতে চেয়েছিল। কয়েক দশক ধরে ভারত আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করছে। সন্ত্রাসবাদীরা হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে। গোটা বিশ্ব এখন বুঝতে পারছে যে সন্ত্রাসবাদ কত বড় চ্যালেঞ্জ। সন্ত্রাসবাদ মানবতাবিরোধী।”
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “বিশ্ব আজ যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের সম্মুখীন, তা কারও উপকারে লাগবে না। সন্ত্রাসবাদ এখন পৃথিবীর মানুষের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভেঙে টুকরো হয়ে যাওয়া বিশ্ব তার সমাধান করতে পারবে না। পরস্পরের উপর আস্থার পথে যে সকল বাধা আছে, আমাদের তা দূর করতে হবে। এখন একসঙ্গে সকলের উন্নয়নের সময়। এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ-এর আবেগ নিয়ে দেখতে হবে বিশ্বকে। মানুষ এগিয়ে এলে বিশ্বের সব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা যাবে।”
তিনি এদিন উল্লেখ করেন, এখনও পর্যন্ত ভারতে ১৭টি লোকসভা নির্বাচন হয়েছে এবং রাজ্যগুলিতে বিধানসভা নির্বাচনের সংখ্যা ৩০০।