• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

কংগ্রেসের মুখ রক্ষা করল তেলেঙ্গানা 

দিল্লি, ৩ ডিসেম্বর –   অপ্রত্যাশিতভাবে গত দশ বছর ধরে তেলেঙ্গানার মসনদে বসা কেসিআর সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করল কংগ্রেস।  ১১৯ আসনের তেলেঙ্গানা বিধানসভায় ৬৪ আসনে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। কথায় বলে ‘মর্নিং শোজ দা ডে’ . সকাল থেকে ভোটার ফলাফলের গতিপ্রকৃতি থেকেই আভাস পাওয়া যায় কি হতে চলেছে। শুরু থেকেই বড় ব্যবধানে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দলকে পিছনে ফেলে দেয়

দিল্লি, ৩ ডিসেম্বর –   অপ্রত্যাশিতভাবে গত দশ বছর ধরে তেলেঙ্গানার মসনদে বসা কেসিআর সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করল কংগ্রেস।  ১১৯ আসনের তেলেঙ্গানা বিধানসভায় ৬৪ আসনে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। কথায় বলে ‘মর্নিং শোজ দা ডে’ . সকাল থেকে ভোটার ফলাফলের গতিপ্রকৃতি থেকেই আভাস পাওয়া যায় কি হতে চলেছে। শুরু থেকেই বড় ব্যবধানে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দলকে পিছনে ফেলে দেয় কংগ্রেস। পোস্টাল ব্যালট শেষে ইভিএম গণনায় দুপুর গড়াতেই তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের এগিয়ে থাকার বার্তা ছড়িয়ে পড়ে , সেই মতো উদযাপনও শুরু করে দেয় কংগ্রেস।  ৬০টি আসন পেরোতেই  জয় নিশ্চিত করে ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করে ফেলে কংগ্রেস। অবশেষে এক দশক পর নতুন সরকার গঠন হতে চলেছে দক্ষিণের এই রাজ্যে । 

বুথ ফেরত সমীক্ষায় তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের জয়ের ইঙ্গিত স্পষ্ট হলেও কিছু সমীক্ষায় কেসি এর-এর দল বিআরএসকে সমীক্ষায় এগিয়ে রাখা হয়।  একাধিক সংস্থা তাদের সমীক্ষায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেও, কংগ্রেসের থেকে বিআরএসকে এগিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের উপরই আস্থা রেখেছেন তেলঙ্গানার মানুষ। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানের মানুষের রায় আমরা মাথা পেতে নিচ্ছি। তবে আদর্শের লড়াই চলবে। আমরা তেলেঙ্গানার জনগণের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। অবশ্যই তেলেঙ্গনায় আমরা প্রতিশ্রুতি পূরণ করব। কঠোর পরিশ্রম এবং সমর্থনের জন্য সমস্ত কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ।’

তেলেঙ্গনায় যে ক্ষমতা দখল করতে পারে তা হয়তো কয়েক মাস আগেও কল্পনা করেনি কংগ্রেস। কিন্তু রেবন্ত রেড্ডি প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার পর ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই শুরু করে শতাব্দী প্রাচীন এই দল। রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো যাত্রায় ভাল সাড়া পাওয়া যায় এই রাজ্যে। তার পর থেকেই বদলের হাওয়া লাগে।একসময়ে কংগ্রেসেই ছিলেন কে চন্দ্রশেখর রাও। পরে পৃথক তেলেঙ্গানা  রাজ্যের দাবিতে নিজের দল গড়েন। সেজন্য তারপর অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে আলাদা তেলেঙ্গানা রাজ্য তৈরি হওয়ার পর তাঁর নেতৃত্ব নিয়েআর কোন প্রশ্নই ছিল না।  যে কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়া পৃথক রাজ্য গঠন সম্ভব ছিল না, সেই দলকেই অপ্রাসঙ্গিক করে ছিলেন দক্ষিণের এই রাজ্যে । কিন্তু রবিবার ফল প্রকাশের পর সেই চন্দ্রশেখরের দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।

অনেকের মতে, চন্দ্রশেখর সরকার বেশ কিছু জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছিল। গরিব মানুষের জন্য ভাতা, অনুদানেরও কোনও খামতি ছিল না। কিন্তু চন্দ্রশেখর ও তাঁর দলের ব্যক্তিগত আচরণ, অহঙ্কার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। বাড়ি থেকেই সরকার চালাতেন তিনি , রাজ্য সচিবালয়ে  প্রায় যেতেনই না।। সেই সঙ্গে মাত্রাছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তারই ফল পেয়েছে কংগ্রেস। 

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রেবন্ত রেড্ডি প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, কংগ্রেসের এই সাফল্যকে ‘তেলেঙ্গানার শহিদদের’ স্মৃতিতে উৎসর্গ করছেন তিনি। রেবন্ত রেড্ডি বলেন, “তেলেঙ্গানার শহিদদের আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মানুষ এবার আমাদের জিতিয়ে এনেছেন। সাধারণ মানুষকে দেওয়া  প্রতিশ্রুতি আমরা পূরণ করব।” তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের সাফল্যের জন্য দলের হাইকমান্ডকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

পরাজয় স্বীকার করে নিয়ে  কেসিআর-পুত্র কে টি রামা রাও এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “টানা দুই বার সরকারে এনে কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য তেলেঙ্গানাবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। আজকের ফলাফল নিয়ে আমি দুঃখিত নই। কিন্তু হতাশা রয়েছে। আমরা যেমন আশা করেছিলাম, তেমন হয়নি। তবে এর থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াব।” নির্বাচনে সাফল্যের জন্য কংগ্রেসকে অভিনন্দনও  জানিয়েছেন কে টি রামা রাও।

রবিবার ভোট গণনায় ১১৯টি আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস পেয়েছে ৬৪টি আসন। জয় বিশ্চিত হতেই এবা মুখ্যমন্ত্রীত্বের পদের জন্য লড়াইয়ে একাধিক দাবিদার। লড়াইয়ে রেবন্ত রেড্ডি ছাড়াও রয়েছেন কে রাজ গোপাল রেড্ডি এবং পি শ্রীনিবাস রেড্ডির মতো কংগ্রেস নেতারা । তবে সেই লড়াইতে এগিয়ে রয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি লড়াকু রেবন্তই।