• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বাঁধের জলের অধিকার নিয়ে ধুন্ধুমার তেলেঙ্গানা-অন্ধ্রপ্রদেশের, নিয়ন্ত্রণ নিল কেন্দ্র  

হায়দরাবাদ, ৩ ডিসেম্বর – বাঁধের জলের অধিকার নিয়ে তুমুল হট্টগোল বাধল তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের মধ্যে। ৩০ নভেম্বর তেলেঙ্গানায়  বিধানসভা নির্বাচনের আগের দিন মধ্য রাতের ঘটনা। নাগার্জুন সাগর বাঁধের নিয়ন্ত্রণ জোর করেই নিজের হাতে নিয়ে নেয় অন্ধ্র প্রদেশ। বাঁধের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের আপত্তি উড়িয়ে খুলে দেয় বাঁধের গেট। বাঁধ থেকে জল ছাড়তে শুরু করে। সেই নিয়ে শুরু হয়ে যায়

হায়দরাবাদ, ৩ ডিসেম্বর – বাঁধের জলের অধিকার নিয়ে তুমুল হট্টগোল বাধল তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের মধ্যে। ৩০ নভেম্বর তেলেঙ্গানায়  বিধানসভা নির্বাচনের আগের দিন মধ্য রাতের ঘটনা। নাগার্জুন সাগর বাঁধের নিয়ন্ত্রণ জোর করেই নিজের হাতে নিয়ে নেয় অন্ধ্র প্রদেশ। বাঁধের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের আপত্তি উড়িয়ে খুলে দেয় বাঁধের গেট। বাঁধ থেকে জল ছাড়তে শুরু করে। সেই নিয়ে শুরু হয়ে যায় ধুন্ধুমার কান্ড। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাঁধের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নেয় কেন্দ্র ।
জানা গিয়েছে, ২৯ নভেম্বর রাত ২টো নাগাদ প্রায় ৭০০ অন্ধ্র প্রদেশ পুলিশ নাগার্জুন সাগর বাঁধে চড়াও হয় এবং বাঁধের বাঁ দিকের গেট খুলে দেয়। কৃষ্ণা নদীর উপরে তৈরি ওই বাঁধ থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এইভাবে  কয়েক হাজার কিউসেক জল নেওয়া হয় বলে অভিযোগ ।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাত ২টো নাগাদ।  অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের এই গোপন অভিযান তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয় তেলেঙ্গানায়। বিধানসভা ভোট এবং ভোটগণনা সংক্রান্ত প্রশাসনিক ব্যস্ততার সুযোগে অন্ধ্র পুলিশ ‘অপারেশন’ চালায় বলে অভিযোগ। অন্ধ্র পুলিশের ৫০০-রও বেশি অফিসার এবং কনস্টেবল এই ‘বাঁধ দখল অভিযানে’ নামেন।

তেলেঙ্গানার মুখ্যসচিব শান্তি কুমারীর অভিযোগ, ‘‘অন্ধ্র প্রদেশের ৫০০ পুলিশ নাগার্জুন সাগর বাঁধের দখল নিয়ে নেয়।বাঁধের সিসিটিভি ভেঙে, জোর করে ৫ এবং ৭ নম্বর লকগেট খুলে খালে জল ঢুকিয়েছে অন্ধ্র পুলিশ। বেআইনি ভাবে প্রায় ৫,০০০ কিউসেক জল দখল করা হয়েছে। ঘটনার জেরে নলগোন্ডা, মেহবুবনগর, নগরকুর্নুলের মতো দক্ষিণ তেলেঙ্গানার জেলাগুলিতে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।” তাঁর দাবি, হায়দরাবাদ ও আশেপাশের এলাকার ২ কোটি বাসিন্দা এর ফলে তীব্র জলকষ্টে পড়বেন। তেলঙ্গানার নলগোন্ডায় অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে দুটি মামলাও দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে, অন্ধ্রপ্রদেশের দাবি, তারা চুক্তি মতোই ন্যায্য জল আদায় করেছে। অন্ধ্রপ্রদেশের সেচ মন্ত্রী অম্বাতী রামবাবু বলেন, “আমরা কোনও চুক্তি ভাঙিনি। কৃষ্ণা নদীর ৬৬ শতাংশ জলের উপরে অন্ধ্রপ্রদেশের অধিকার রয়েছে, বাকি ৩৪ শতাংশ তেলেঙ্গানার। আমাদের ন্যায্য পাওনা ছাড়া এক বিন্দুও বেশি জল ব্যবহার করিনি আমরা। এই জলের উপরে আমাদেরই অধিকার রয়েছে।”
জল ছাড়া নিয়ে দুই রাজ্যের মধ্যে অশান্তির সূত্রপাত হতেই কেন্দ্র পদক্ষেপ করে। দুই রাজ্যকেই জল ছাড়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশকে এই নির্দেশ দেয়। দুই রাজ্যই এই প্রস্তাবে সম্মতি জানায়। আপাতত বাঁধের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সিআরপিএফ। চুক্তি মতো দুই রাজ্যই সমান জল পাচ্ছে কি না, তার উপরও নজরদারি করবে সিআরপিএফ।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৫ সালেও অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ জোর করে বাঁধের দখল নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তেলেঙ্গানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় ।