• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বারাণসী-মথুরার মন্দির রাখা হোক উপাসনাস্থল আইনের বাইরে, সুপ্রিম কোর্টে আর্জি

লখনউ, ১৪ নভেম্বর– উপাসনাস্থল আইন নিয়ে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত অবস্থান স্পষ্ট করতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিজেদের অবস্থান সর্বোচ্চ আদালতকে জানাতে হবে। আগামী বছরের শুরুতেই মামলার শুনানির সূচনা হবে। সোমবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালার বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিয়েছে। ১৯৯১ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের তৈরি উপাসনার

লখনউ, ১৪ নভেম্বর– উপাসনাস্থল আইন নিয়ে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত অবস্থান স্পষ্ট করতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিজেদের অবস্থান সর্বোচ্চ আদালতকে জানাতে হবে। আগামী বছরের শুরুতেই মামলার শুনানির সূচনা হবে। সোমবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালার বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিয়েছে।

১৯৯১ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের তৈরি উপাসনার স্থল আইনে বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট দেশের ধর্ম নির্বিশেষে উপাসনাস্থলগুলি যে অবস্থায় আছে সেই রকমই থাকবে। সেগুলির কাঠামো, চরিত্র ইত্যাদির পরিবর্তন করা যাবে না।

তবে অযোধ্যার বাবরি মসজিদকে এই আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল। বাবরি নিয়ে আড়াইশো বছরের পুরনো মামলা আদালতের বিচারাধীন থাকায় সেটিকে আইনের অন্তর্ভূক্ত করা যায়নি। বাবরি নিয়ে মূল বিতর্ক ছিল সেটি শ্রীরামচন্দ্রের জন্মস্থানের উপর নির্মিত মন্দির ভেঙে তৈরি হয়েছিল।

চলতি মামলায় বিজেপি নেতা ও সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী দাবি করেছেন, অযোধ্যার মতো বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির এবং মথুরা শ্রীকৃষ্ণজন্মভূমি মন্দিরকেও ১৯৯১ সালের ওই আইনের পরিধির বাইরে রাখা হোক। আদালত এই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিক।

প্রসঙ্গত, ওই দুই মন্দিরের একাংশ ভেঙে লাগোয়া মসজিদ তৈরি হয়েছে দাবি করে হিন্দু সমাজের একাধিক সংগঠন ও ব্যক্তি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। তাঁদের দাবি, মন্দিরের জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। যার অর্থ কয়েক শো বছরের পুরনো মসজিদ সরিয়ে নিতে হবে অন্যত্র। এ নিয়ে আদালতের বাইরে ধর্মীয় বিভাজনের উত্তাপ বাড়ছে।

উত্তরপ্রদেশের একাধিক নিম্ন আদালত ১৯৯১ সালের আইনকে ঘিরে কোনও মামলা গ্রহণ করতে গোড়ায় অস্বীকার করে। কিন্তু বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ বিচারপতি থাকাকালে একটি মামলায় মন্তব্য করেন, আইনে উপাসনাস্থলের কাঠামো এবং চরিত্র বদল করা যাবে না বলা হয়েছে। কিন্তু আইনের কোনও ধারা, উপধারা আদালত পর্যালোচনা করতে পারবে না, এমন কথা বলা হয়নি। বিচারপতির চন্দ্রচূড়ের ওই পর্যবেক্ষণের পর অনেক আদালতেই ১৯৯১ সালের আইনের পরিবর্তন চেয়ে মামলা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টও ওই আইন নিয়ে একাধিক মামলার শুনানি শুরু করবে আগামী বছরের গোড়া থেকে। তার আগে তারা বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের অভিমত জেনে নিতে চায়।

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালে সংসদে আইনটি পাশ হওয়ার সময় প্রধান বিরোধী দল বিজেপি তীব্র আপত্তি জানিয়ে অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেছিল। এখন ক্ষমতাসীন বিজেপির সরকার আইনটি সম্পর্কে কী অবস্থান নেয় সেটাই দেখার।

সুপ্রিম কোর্ট আজ ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে বিস্তারিত হলফনামা দাখিল করতে সময় মঞ্জুর করেছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পার্দিওয়ালার বেঞ্চের কাছে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আরও সময় চান। তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে আরও আলোচনা করা দরকার। তাঁকে তাই সময় দেওয়া হোক।

আজ বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী আদালতে জানান, তিনি তাঁর পিটিশনে আইনটিকে বাতিল করার দাবি করেননি। তাঁর বক্তব্য, অযোধ্যা রাম মন্দির বিবাদের মতো, কাশী এবং মথুরা নিয়ে বিতর্কিত স্থান সম্পর্কিত বিষয়গুলিকেও উপাসনাস্থল (বিশেষ বিধান) আইনের বাইরে রাখতে হবে।