রাজ্যে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র নিষেধাজ্ঞায় সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ   

কলকাতা , ১৮ মে –  দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ বাংলার কোনও প্রেক্ষাগৃহে  দেখানো হবে না, এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এই ছবিকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও রকম অশান্তি না হয়, সেজন্যই এই নির্দেশ বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৮ মে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।  তাঁর এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন ছবির নির্মাতারা।  আগামী ১৮ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে।

মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, দেশের সব রাজ্যের প্রেক্ষাগৃহেই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখানো হচ্ছে। কোথাও তেমন কোনও অশান্তির খবরও জানা যায়নি। এ রাজ্যেও যে কদিন ছবিটি দেখানো হয়েছে, সেখানেও কোনও অশান্তির খবর নেই। তাই রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই ছবি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের কোনও যৌক্তিকতা নেই। প্রধান বিচারপতি জানান, নির্দিষ্ট করে বাংলার কোথাও এই ছবিতে ঘিরে অশান্তি হলে সেখানে ছবিটি নিষিদ্ধ করা যেত। কিন্তু কোনও অশান্তি ছাড়াই গোটা রাজ্যে ছবি নিষিদ্ধ করার যৌক্তিকতাই নেই। সিনেমাটি নিষিদ্ধ করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। শুধুমাত্র ভাবনার উপর নির্ভর করে  মৌলিক অধিকার খর্ব করা যায় না বলে আদালত জানায়।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর আপাতত পশ্চিমবঙ্গে ‘কেরালা স্টোরি’ দেখানোয় আর কোনও বাধা থাকল না।

এই স্থগিতাদেশের পর রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ অশান্তি এড়াতে আগে থেকে সতর্কতা অবলম্বন করেছিল রাজ্য। সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর এ বার কোথাও কিছু হলে সে দায় রাজ্যের নয়।’’

ঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে গত ৫ মে। মুক্তির আগে থেকেই এই ছবিকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে । ছবিটি  উস্কানিমূলক বলে অভিযোগ । কেরল, তামিলনাড়ু ছাড়াও কিছু রাজ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে ছবিকে ঘিরে অশান্তি হয়েছে। আবার  মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের মতো বিজেপিশাসিত রাজ্যে ছবিটি করমুক্ত করা হয়েছে। বাংলার নিষেধাজ্ঞায় এ বার স্থগিতাদেশ দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।


পরিচালক সুদীপ্ত সেন বৃহস্পতিবার বলেন, ‘এখনও আদালতের রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাইনি। তবে এটা জেনে আমি খুবই আনন্দিত যে, বাংলার মানুষ ছবিটি দেখতে পারবেন। এক জন বাঙালি হিসাবে সত্যিই খুব কষ্ট হচ্ছিল। এখন আমি খুশি । কারণ, আমি যে রাজ্যের মানুষ, সেখানকার মানুষ ছবিটি দেখতে পাবেন’।