দিল্লি, ৩ অক্টোবর– সম্প্রতি বাংলায় নানান মামলায় ইডি, সিবিআইয়ের অতিসক্রিয়তা নিয়ে ইতিমধ্যেই মানবাধিকার হরণের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল সরকার সহ সমস্ত বিরোধী দল। এবার দেশের শীর্ষ আদালতের সতর্কবার্তায় সেই অভিযোগেই যেন সিলমোহর পড়ল। মঙ্গলবার একটি দুর্নীতির তদন্তের মামলায় সেই অভিযোগ ঘিরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে সতর্ক করল দেশের শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার ইডিকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, তারা দেশে বেআইনি পথে অর্থ লেনদেনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তদন্ত করে থাকে। তদন্তে স্বচ্ছতার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা জরুরি। সংশ্লিষ্ট মামলায় দুই ব্যবসায়ীকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয় তা সংবিধানের মৌলিক অধিকার হরণ বলে উল্লেখ করেছে শীর্ষ কোর্ট।
যে মামলা ঘিরে এই মত শীর্ষ আদালতের সেটি হল, পাঞ্জাবের বাসিন্দা দুই ব্যবসায়ী পঙ্কজ ও বসন্ত বনসলের করা মামলা । সম্প্রতি বেআইনি পথে অর্থ লেনদেনের অভিযোগে একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ওই দুই কর্তাকে তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। জেরার শেষে তাঁদের গ্রেফতার করেন ইডির তদন্তকারীরা। অভিযোগ, গ্রেফতারের কারণ জানানো হয়নি ধৃত এবং তাঁদের পরিবারের লোকজনকে, যা সুপ্রিম কোর্ট ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশিকা লঙ্ঘন বলে দাবি করা হয়েছে মামলায়।
ধৃতদের আদালতে তোলা হলে জানা যায়, যে মামলায় তাদের জেরার জন্য ডাকা হয়েছিল সেই মামলা নয় ভিন্ন এক অভিযোগে জেরার দিন কোম্পানির দুই কর্তার বিরুদ্ধে মামলা ঠোকে ইডি। সেই মামলায় দু’জনকে গ্রেফতার করে তারা। অর্থাৎ এক মামলায় জেরার জন্য ডেকে আর এক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাও মামলা করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দুই ব্যক্তিকে হেফাজতে নেয় তদন্তকারীরা।
মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি এস বোপান্না এবং সঞ্জয় কুমার ধৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ইডির তীব্র সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটিকে সতর্ক করে দিয়েছে শীর্ষ কোট। আদালত বলেছে, দ্রুত তদন্তের নামে তাড়াহুড়ো করা যাবে না।
ইডির বিরুদ্ধে অভিযোগ, গ্রেফতারির সময় ধৃতদের মৌখিকভাবে শুধু হেফাজতে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। যদিও সুপ্রিম কোর্ট এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গাইডলাইন হল, গ্রেফতারির সময় ধৃত বা পরিজনকে অ্যারেস্ট মেমো দিতে হবে। তাতে গ্রেফতারের কারণ এবং মামলার উল্লেখ থাকতে হবে।