দিল্লি, ১ এপ্রিল– শুক্র ও শনিবারের আবহাওয়া ভালোই গেছে। না ঠান্ডা, না গরম। গোটা গ্রীষ্ম এরকম কাটলে কি ভালোই যে হত। কিন্তু তা হওয়ার নয়। কারণ ইতিমধ্যেই তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, এ বছরে আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে তীব্র দাবদাহ নাজেহাল করে দেবে। ভারতের একাধিক রাজ্যে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে। এপ্রিল-জুন-জুলাইয়ে আরও গরম বাড়তে চলেছে দেশে, এমনটাই পূর্বাভাস।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী তিন মাস এই ভোগান্তি সহ্য করতে হবে। ভারতের অনেক এলাকায় তাপমাত্রা আগের বছরের তুলনায় বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে থাকবে। ২০২০ সালের দাবদাহের স্মৃতি এখনও টাটকা। এমন প্রচণ্ড গরম আর তাপপ্রবাহ হয়েছিল সে বছর যে নাজেহাল হতে হয়েছিল মানুষজনকে। তাপপ্রবাহে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল। এ বছরেও তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে। পশ্চিম ভারতে কোঙ্কণ এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের কচ্ছ অঞ্চলে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এখনই সেখানে দিনের তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে পৌঁছে যেতে পারে। গত দু’বছরের নিরিখে দিল্লিতে সোমবারটা ছিল ফেব্রুয়ারির উষ্ণতম দিন।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, পশ্চিমে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে ঠিকই, তবে তা ভারতে ঢুকে উত্তর-পশ্চিমে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। কাজেই তেমন বৃষ্টিও হয়নি, তেমনভাবে তুষারপাতও হয়নি। শীতকালীন তাপমাত্রার যে পতন হয় তাও সেভাবে হয়নি। এই শীতেও পাহাড়ি এলাকাগুলোর তাপমাত্রা খুব একটা কমেনি। ফেব্রুয়ারিতেও উষ্ণ শীতকাল দেখেছে উত্তর ভারত।
আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, সারা দেশ, বিশ্বের বিভিন্ন শহরের আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি বদলাচ্ছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ হল জলবায়ু বদল। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ছে, সমুদ্রের জলের তাপমাত্রাও বেড়েছে, মেরু প্রদেশে বরফ গলছে, কাজেই এর ভয়ঙ্কর প্রভাব দেখা দিচ্ছে। গত ৫০ বছরে মেরুপ্রদেশের তাপমাত্রা বেড়েছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আন্টার্কটিকের এসপেরানজা বেসের অবস্থা বিপজ্জনক জায়গায় দাঁড়িয়েছে। তার ওপর গ্রিন হাউস গ্যাসের বাড়বাড়ন্ত তো রয়েছেই। এইসব কিছুই আবহাওয়ার ভোলবদলের অন্যতম প্রধান কারণ।