কলকাতা, ১০ এপ্রিল – আদিবাসী মহিলাদের দণ্ডি কাটানোর বিষয়টিকে জাতীয় স্তরে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হল গেরুয়া শিবির। বিষয়টি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দিয়ে জানালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আগামী দিনে আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে এমন আচরণ যাতে আর না করা হয়, সে ব্যাপারে হস্তক্ষেপ চেয়ে সোমবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হন সুকান্ত ।
সম্প্রতি দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে প্রায় ২০০ জন মহিলা তাঁদের পরিবার-সহ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এর পর ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন। এঁদের মধ্যে ৪ জন মহিলাকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার অপরাধে ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করাতে দণ্ডি কাটানো হয়। ওই ৪ জন মহিলা তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের। এই ঘটনায় আদিবাসী সমাজের প্রতি বাংলার শাসকদলের ‘নিম্নরুচির পরিচয় ’ নিয়ে সোচ্চার বিজেপি।
রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো চিঠিতে সুকান্ত লিখেছেন, ‘‘যন্ত্রণার সঙ্গে একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আপনার কাছে তুলে ধরছি। আমার লোকসভা কেন্দ্র বালুরঘাটের অন্তর্গত তপন বিধানসভা এলাকায় আদিবাসী পরিবারের প্রায় ২০০ জন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এটা ভাল চোখে দেখেননি তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তৃণমূলের গুন্ডারা ভয় দেখিয়ে জোর করে তাঁদের আবার তৃণমূলে যোগদান করিয়েছে। এটা যদি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হত, তা হলে আমাদের কিছু বলার ছিল না। কিন্তু অমানবিক ভাবে জোর করে তাঁদের দণ্ডি কাটতে বাধ্য করা হয়েছে।’’ এর পরেই চিঠিতে সুকান্ত লিখেছেন, ‘‘অতীতের বিভিন্ন ঘটনাবলি এবং নানা মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে, আদিবাসীদের প্রতি তৃণমূলের নেতাদের মানসিকতা কেমন। তবে এটা আর বরদাস্ত করা যাবে না।’’ তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী বরাবরই পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের প্রতি আন্তরিক এবং সংবেদনশীল।
রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি জাতীয় তফসিলি জনজাতি কমিশনের চেয়ারপার্সনকেও চিঠি লিখেছেন সুকান্ত। তপনের ঘটনায় অনুসন্ধানের দাবি জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এই ঘটনায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
ঘটনাচক্রে দেশের রাষ্ট্রপতি আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি। এর আগে তাঁকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি। তাঁর মন্ত্রিসভার এক সদস্যের এমন মন্তব্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজেই দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতিকে সুকান্তের চিঠি রাজনৈতিক দিক থেকে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।