আদানি ভরাডুবির আঁচও পড়বে না রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলিতে, সংসদে সাফ জানাল মোদি সরকার

দিল্লি, ১৩ ফেব্রুয়ারি– আদানি শুধু নিজে ডোবেনি ডুবিয়েছে অন্য কোম্পানিগুলিকেও। গোটা ভারতে শেয়ার বাজারে আদানি গোষ্ঠীর বিপর্যয়ের আঁচ পড়বে না রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলির উপর। সোমবার নরেন্দ্র মোদি সরকারের তরফে সংসদে এই দাবি করা হয়েছে হয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থায় লগ্নির কারণে শেয়ার বাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এলআইসির পাশাপাশি জিআইসি-ও বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, তা নস্যাৎ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভাগবত করাড।

কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারির প্রশ্নের জবাবে লোকসভায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আদানি গোষ্ঠীতে দেশের পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার মোট লগ্নি ৩৪৭ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। যা পাঁচটি সংস্থার মোট সম্পদ মূল্যের (এইউএম বা অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্ট)-এর মাত্র ০.১৪ শতাংশ। তা ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারতীয় জীবনবিমা নিগমের মোট সম্পদের ১ শতাংশেরও কম আদানি গোষ্ঠীতে লগ্নি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। যদিও সোমবারও কেন্দ্রের আশ্বাসে ভরসা না রেখে আদানি-কাণ্ডের তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গড়ার দাবিতে বিরোধীরা সরব হন সংসদে।

প্রসঙ্গত, গত ২ ফেব্রুয়ারি এলআইসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের হিসাবে তাঁদের মোট সম্পত্তির মূল্য ৪১ লক্ষ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের হিসাবে আদানি গোষ্ঠীর সবক’টি সংস্থা মিলিয়ে এলআইসির কেনা শেয়ারের মূল্য ৩৫ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। অর্থাৎ, সংস্থার মোট সম্পদের ১ শতাংশও নয়। ফলে তর্কের খাতিরে আদানি গোষ্ঠীর ভরাডুবির সম্ভাবনা মেনে নিলেও তাতে এলআইসির ‘বিপুল ক্ষতির’ কোনও সম্ভবনা নেই। এলআইসির ব্যবসা এবং লগ্নি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য আদানিদের হাতে রয়েছে বলে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরকেও ‘অসত্য’ বলেছিলেন এলআইসি কর্তৃপক্ষ।
জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে গৌতম আদানির শিল্পগোষ্ঠীর ‘প্রতারণা’ নিয়ে আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট সামনে আসার পর পড়ে যায় তাদের সংস্থাগুলির শেয়ারের দর। এই পরিস্থিতিতে আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের নতুন শেয়ার ছাড়ার (এফপিও) প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায় গত ১ ফেব্রুয়ারি। ঘটনাচক্রে এটা হয় সেই দিনই, যে দিন দেশের অর্থনীতির বার্ষিক দিক-নির্দেশ অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাজেট প্রস্তাব করেন মোদি সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এই পরিস্থিতিতে আদানি গোষ্ঠীতে লগ্নি করা রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলি বিপাকে পড়তে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়।