সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন সেই ইচ্ছে ছোট থেকেই ছিল ছেলের । বাবা বলেন, “সেনায় সুযোগ পাওয়ার জন্য খুব কষ্ট করেছে আমার ছেলে। শুধু বলত, জঙ্গিদের আমরা দেখে নেব। এমনও বলত যে, যত বেশি জঙ্গিকে খতম করব, আমার প্রোমোশন তত ভাল হবে।” রাজৌরিতে সংঘর্ষ চলাকালীন শচীনের শেষ কথাও ছিল তাই , “এই দুই জঙ্গিকে খতম করতে দাও। ওদের মেরেই বাড়ি ফিরব।”
শচিন পরিবারে সবার ছোট। ২০১৯ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। ৮ ডিসেম্বরে বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল । কিন্তু তার আগেই সব শেষ। শচিনের দাদা মার্চেন্ট নেভিতে কাজ করেন। দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সবার ছোট শচিন আর নেই একথা ভাবতেও পারছেন না বাড়ির কেউই।শচিনের স্মৃতিকে সম্বল করেই বেঁচে থাকতে হবে পরিবারের সদস্যদের।
বুধবার থেকে বদলে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের আগরার গুপ্ত পরিবারের ছবিটাও। জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরিতে বুধবার এই পরিবারেরই ছেলে ক্যাপ্টেন শুভমের মৃত্যু হয়েছে জঙ্গি হানায়। দীপাবলিতে বাড়িতে ফোন করে শুভম জানিয়েছিলেন, একটি কাজ সেরে খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু বাড়ি আর ফেরা হল না তাঁর।
ছেলের শোকে দিশেহারা সেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের পরিষদীয় মন্ত্রী যোগেন্দ্র উপাধ্যায়।পরিবারের হাতে ৫০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিতে যান তিনি। মন্ত্রীকে দেখেই কান্নায় আরও ভেঙে পড়েন শুভমের মা। তাঁর হাতে ৫০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন মন্ত্রী। ওই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এই দৃশ্য অসহ্য হয়ে ওঠে শুভমের মায়ের কাছে। মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “এই সব প্রদর্শনী বন্ধ করুন। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিন। আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেল।” কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলতে থাকেন, “ও শুভম তুই কোথায়, ফিরে আয়।” সন্তানহারা মাকে এভাবে কষ্ট পেতে দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মন্ত্রীও। তিনি সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেন। বুধবার জম্মুর রাজৌরিতে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে দুই সেনা আধিকারিক-সহ যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ছিলেন ক্যাপ্টেন শুভমও ।