দিল্লি, ২৪ সেপ্টেম্বর– কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের জন্য প্রথম মনোনয়ন তুললেন তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুর । শনিবার মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হতেই শশীর তরফে তাঁর প্রতিনিধিরা দিল্লিতে দলের নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক মধুসূদন মিস্ত্রির কাছ থেকে মনোনয়ন পত্র তুলে নিয়ে গিয়েছেন।
যদিও শশীর নির্বাচনে লড়ার এই সিদ্ধান্তে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী বা গান্ধি ঘনিষ্ঠ, কেউই খুশি নন। শশী থারুরকে নিজেদের প্রতিনিধি হিসাবে দেখছে না জি-২৩ গোষ্ঠী। উলটে তাঁকে নিজেদের ‘দল’ থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছেন কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতারা। বছর দুয়েক আগে সংগঠনের সংস্কার চেয়ে অন্তর্বর্তীকালীন দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধিকে চিঠি দিয়েছিলেন কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ ২৩ নেতা। যাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিরুবনন্তপুরম সাংসদ শশী থারুর। সেই থারুরই যখন দলের সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরুর পর সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, মনে করা হচ্ছিল তিনিই হতে চলেছেন বিক্ষুব্ধদের মুখ। কিন্তু গল্পে নাটকীয় মোড় আসে যখন তিনি চলতি সপ্তাহে সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে যান। সেদিন দলনেত্রীকে তিনি বোঝান যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন হলে বিজেপি বলা শুরু করবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পুরোটাই লোক দেখানো। এর থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সভাপতি নির্ধারণ হলে তা অনেক বেশি সুখকর হবে দলের কাছে। তাই হার নিশ্চিত জেনেও তিনি সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।
এই কথা শুনে সোনিয়া বেজায় খুশি হলেও চটেছেন জি-২৩ নেতারা। তাঁদের শিবিরের বক্তব্য, এইভাবে আসলে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছেন থারুর। একদিকে, বিক্ষুব্ধদের বলা যাবে যে তিনি হাইকমান্ডের প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়েছেন। আবার গান্ধিদের কাছে নিজের নম্বর বাড়িয়ে ঘুরপথে কর্মসমিতিতে আসন পাকা করার রাস্তাও করে ফেলেছেন। যদিও বিক্ষুব্ধ শিবিরের দুই প্রধান মুখ মণীশ তিওয়ারি বা আনন্দ শর্মা, কেউই তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে বিক্ষুব্ধদের তরফে অন্য কাউকে প্রার্থী করা যায় নাকি, সেটাও ভাবনা চিন্তা হচ্ছে।
যদিও কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ শিবির এখন অনেকটাই ছন্নছাড়া। আজাদ দল ছেড়েছেন। কপিল সিব্বল দল ছেড়েছেন। শশী থারুরও ক্রমে গান্ধিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছেন। আরও এক বিক্ষুব্ধ ভুপিন্দর সিং হুডাও ক্রমে দলের মূল ধারায় ঢুকে গিয়েছেন। শুক্রবারও সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। সেখানে নাকি দলের নির্বাচন এবং সংগঠন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আরেক বিক্ষুব্ধ নেতা মহারাষ্ট্রের অশোক চহ্বানও প্রকাশ্যে বলছেন, ‘জি-২৩ গ্রুপ শেষ হয়ে গিয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দলের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনা। দলে নির্বাচনের মাধ্যমে স্থায়ী সভাপতি হোক, সেটা নিশ্চিত করা। সেটা তো পূরণই হয়ে গেল।’