একের পর এক সুপারহিট হিন্দি ছবির নায়িকা তখন তিনি। ক্যারিয়ার তখন একেবারে মধ্যগগনে। সেইসময়েই মাত্র একটা ফটোশুট আর ক্যারিয়ার প্রায় শেষ হতে বসে শর্মিলা ঠাকুরের। এক বিখ্যাত ফিল্ম পত্রিকার কভারে ধরা দেন বিকিনি পরিহিতা শর্মিলা। কোনও ছবিতে শুয়ে, কোথাও দাঁড়িয়ে, আবার কোথাও বসে একেকরকম পোজ দিয়ে তোলা তাঁর ছ’টি ছবি প্রকাশিত হয় সেই পত্রিকায়। ব্যস! মুহূর্তের মধ্যে চর্চার কেন্দ্রে চলে আসেন শর্মিলা।
প্রথমে অভিনেত্রী ভেবেছিলেন, সবাই বোধহয় তাঁর সৌন্দর্য নিয়ে কথা বলছে। তবে সেই ভুল ভাঙিয়ে দেন তাঁর ‘আরাধনা’ ছবির পরিচালক শক্তি সামন্ত। সেই পত্রিকা বের হতেই শক্তি রাতারাতি ডেকে পাঠান শর্মিলাকে। সেখানে যেতেই তিনি দেখেন, পরিচালক ভীষণই চিন্তিত। এরপর পরিচালক তাঁকে বলেন, “এসব তুমি কী করেছ! ইন্ডাস্ট্রি এবার তোমায় নায়িকা থেকে ভ্যাম্প (সিনেমায় ভিলেন চরিত্রে থাকা মহিলা) বানিয়ে দেবে।
বাংলা ছবি দিয়ে পথচলা শুরু হলেও পরে হিন্দি ছবিতেই মনোনিবেশ করেন। ‘কাশ্মীর কি কলি’, ‘ওয়াক্ত’, ‘অ্যান ইভিনিং ইন প্যারিস’, ‘আরাধনা’ তবে মাঝে টুকটাক বাংলা সিনেমাতেও দেখা মিলেছে তাঁর। সেই শর্মিলারই কেরিয়ার একসময় শেষ হয়ে যেতে বসেছিল হীনমন্যতায়। ভেবেছিলেন, সব বুঝি ছেড়ে দিতে হবে। তবে সেইসময় তাঁকে সাহস জোগান তৎকালীন প্রেমিক নবাব মনসুর আলি খান পতৌদি, ওরফে টাইগার পতৌদি । ফিরিয়ে এনেছিলেন অভিনেত্রীর আত্মবিশ্বাস।
শক্তিবাবুর কথা শুনে একেবারে ভেঙে পড়েন শর্মিলা। শর্মিলা জানিয়েছেন, এইসময়ই তাঁর মুশকিল আসান হয়ে দেখা দেন টাইগার পতৌদি। তৎকালীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের তারকা তখন শর্মিলার প্রেমিক। সব বিতর্কের কথা জানিয়ে সেসময় পতৌদিকে টেলিগ্রাম করেন অভিনেত্রী। তারপরই পাল্টা টেলিগ্রামে টাইগার তাঁকে বলেন, “তোমায় দেখতে খুব সুন্দর লাগছে।” শর্মিলা বলেন, “টাইগারের এই ছোট্ট বার্তাটুকুই আমার কাছে যথেষ্ট ছিল। এরপর আর কোনও বিতর্কে কান দিইনি আমি।”
ব্যাস আর কোনও বিতর্কে কান দেন নি শর্মিলা। এগিয়ে যান তার পরের সিনেমাগুলিতে অভিনয়ের জন্য। তারপর অবশ্য তাকে আর পেছন ফিরে দেখতে হয়নি।