দিল্লি, ১৯ এপ্রিল– ভাইপোর উপর তাঁর আস্থা অটুট রেখে বিজেপিতে যাওয়ার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন স্বয়ং অজিত পাওয়ার। মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়ে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার জানিয়েছেন তাঁর দল পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছাই নেই।
কিন্তু তবুও অজিত পাওয়ারের যাওয়ার জল্পনা এতটুকুও কমেনি। কারণ তাঁর কন্যা সুপ্রিয়া সুখে। তাঁর একটি মন্তব্য ঘিরে এখন কাঁপন ধরেছে সব বিরোধী দলেই। গোটা বিরোধী শিবির ঘর গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। চোখে চোখ রাখা শুরু হয়েছে বিধায়কদের। এমনকী নিশ্চিন্তে নেই মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের শিবিরও। শিন্ডে অনুগামীরাও সতর্ক আসন্ন রাজনৈতিক ডামাডোলের আশঙ্কায়।
মঙ্গলবার অজিত পাওয়ার গত এক পক্ষকালের জল্পনায় জল ঢেলে ঘোষণা করেন, ‘আমি এনসিপিতে ছিলাম, আছি, থাকব।’ অজিতের কাকা শরদ পাওয়ারও ভাইপোর কথায় সায় দিলে বলেন, ‘সব গুজব। অজিত দলেই আছে। অনুগামী বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকের খবর মিথ্যা।’ পাওয়ার আরও বলেন, ‘আমাকে না জানিয়ে বিধায়কদের বৈঠক ডাকার প্রশ্নই ওঠে না।’
বুধবার সকালে রাজনৈতিক জল্পনা নয়া মাত্রা নেয় পাওয়ারের মেয়ে সাংসদ সুপ্রিয়া সুলের কথায়। সুপ্রিয়াই এখন বাবা-মায়ের সর্বক্ষণের সঙ্গী। দল পরিচালনায় পাওয়ার তাঁকে না জানিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেন না। স্বভাবতই সুপ্রিয়ার কথাকে ফেলে দিতে পারছে না কেনও দলই। সব দলই তাই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে আসন্ন রাজনৈতিক ভূমিকম্প থেকে কীভাবে দলকে অটুট রাখা যায়।
সুপিরিয়া বলেছেন, ‘আগামী দিন পনেরোর মধ্যে দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বড় রাজনৈতিক ভূমিকম্প হতে চলেছে।’ পাওয়ার কন্যার এই মন্তব্যের পর পরই শিবসেনার শিন্ডে গোষ্ঠীর বিধায়ক তথা মুখপাত্র সঞ্জয় সিরশাত ঘোষণা করেন, ‘অজিত পাওয়ার একা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু তিনি যদি এনসিপি-র বিধায়ক ভাঙিয়ে সদলবলে বিজেপিতে যোগ দেন তাহলে আমরা আর সরকারে থাকব না।’
এমনিতেই অজিত বিজেপিতে বিধায়কদের নিয়ে যোগ দিলে পদ্ম শিবিরের আর শিন্ডের সঙ্গে জোট সরকার চালানোর প্রয়োজন হবে না। আগামী বছর নভেম্বরে মহারাষ্ট্রে বিধানসভার ভোট। বিজেপির পরিকল্পনা হল, লোকসভার সঙ্গে বিধানসভার ভোট করিয়ে নেওয়া। সে পর্যন্ত অজিতকে মুখ্যমন্ত্রী করে সরকার টিকিয়ে রাখতে পারে তারা।
অন্যদিকে, দিন পনেরোর মধ্যে জাতীয় স্তরে বিরোধী দলগুলির একটি মঞ্চ তৈরির কথা ঘোষণা করা হতে পারে। বিজেপি বিরোধী জোট গড়া নিয়ে শরদ পাওয়ার বিভিন্ন সময়ে অবস্থান বদল করলেও সুপ্রিয়া মত বদল করেননি। তিনি অজিত পাওয়ারেরও উল্টো মেরুর বাসিন্দা। কংগ্রেস সহ সব বিরোধী দলের সঙ্গেও তাঁর সু-সম্পর্ক রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, দিল্লির রাজনৈতিক ভূমিকম্প বলতে সুপ্রিয়া বিরোধীদের সম্ভাব্য মঞ্চ গড়ার বিষয়টিই বলতে চেয়েছেন।